জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় হবে বাংলাদেশ
নিউজ ডেস্ক
জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় হবে বাংলাদেশ
জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশ। ভারতের পরই বাংলাদেশ সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ভারত। এর পরই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেশ হবে বাংলাদেশ।
অর্থবছর শেষে বাংলাদেশ পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। এরপর ভুটান চার দশমিক নয় শতাংশ, মালদ্বীপ চার দশমিক সাত শতাংশ, নেপাল তিন দশমিক তিন শতাংশ, শ্রীলঙ্কা দুই দশমিক দুই শতাংশ এবং পাকিস্তান এক দশমিক আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় সামগ্রিকভাবে ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে বলেও জানায় সংস্থাটি।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির ঢাকা অফিসে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক দুই বছরের আপডেটে বলেছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আবার বেড়ে পাঁচ দশমিক সাত হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সংস্কার খুব জরুরি। পাশাপাশি বিদেশী মুদ্রার একক বিনিময় হার চালু হলে দেশে বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। একক বিনিময় হারে মুদ্রাস্ফীতিও আরও কমবে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের (ডব্লিউবি) বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসর্গ, সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড জেমস হ্যাভেন এবং রঙ্গিত ঘোষ।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতি, লেনদেন ভারসাম্যে ধারাবাহিক ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারিপরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে এই ষাণ্মাসিক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে আর্থিক সংস্কার ও মুদ্রার একক বিনিময় হার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি। মুদ্রার বিনিময় হারে অধিকতর নমনীয়তা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। অর্থনীতির বৈচিত্র্য এবং অর্থনীতির মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে কাঠামোগত সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে; সেই সঙ্গে তারল্যের রাশ টেনে ধরা, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, আমদানি বিধিনিষেধ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিজনিত কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাহত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক জানান, বাংলাদেশের শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক মূল নীতি দেশটিকে অতীতের অনেক চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।
আর্থিক সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসর্গ এই প্রতিবেদনে জানান, দক্ষিণ এশিয়া তার জনশক্তিকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। যেটি একটি হাতছাড়া সুযোগের মতো। যদি এই অঞ্চলটি অন্যান্য উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির মতো কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ নিযুক্ত করে, তবে এর আউটপুট ১৬ শতাংশের বেশি হতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার জানান, দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা স্বল্পমেয়াদে উজ্জ্বল থাকবে। কিন্তু ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় কালো মেঘ থাকবে। এ জন্য প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি জোরদার করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি জানান, এই অঞ্চলের দেশগুলোকে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য নীতি গ্রহণ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার, কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের অঞ্চলের তুলনায় বেশি।
২০০০ সাল থেকে কর্মরত কর্মজীবী জনসংখ্যার অংশ হ্রাস পাচ্ছে। অন্যান্য উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতি অঞ্চলে ৭০ শতাংশের তুলনায় ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মসংস্থানের অনুপাত ছিল ৫৯ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়াই একমাত্র অঞ্চল যেখানে কর্মরত বয়সী পুরুষদের হার গত দুই দশকে কমেছে এবং এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম কর্মজীবী নারী রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, বাংলাদেশে ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা দরকার। সম্পদের মান ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে ব্যাংক একীভূত করা উচিত বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির রাশ আরও টেনে ধরা দরকার বলেও তারা অভিমত দিয়েছে।
- Cashless society to expedite country`s development, ease revenue collection : Prime Minister
- প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় করোনায়ও সচল অর্থনীতি
- ডিএসইর লেনদেন সাড়ে ১১শ কোটি টাকা ছাড়াল
- ১১শ` কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হচ্ছে রেলের নতুন বগি ও ইঞ্জিন
- বাংলাদেশকে ৮৬০ কোটি টাকা দিচ্ছে এডিবি
- দেশেই বাজাজের অটোরিকশা তৈরি করবে রানার
- এবারের বাণিজ্য মেলা হতে পারে অনলাইনে
- সম্ভাবনাময় ই-কমার্স ॥ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে
- পুঁজিবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় চলছে লেনদেন
- আরেকটি নতুন মাইলফলকের পথে রিজার্ভ