ঢাকা, বুধবার   ০১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

বিএনপির লক্ষ্য একাত্তর মুছে সাত চল্লিশে ফিরে যাওয়া : শাহরিয়ার কবির

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১৮ এপ্রিল ২০২৪  

বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির

বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির

বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন সত্য। তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেনি। বিএনপির লক্ষ্য হচ্ছে একাত্তর মুছে সাত চল্লিশে ফিরে যাওয়া।

গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ইতিহাস বিভাগের আয়োজনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

শাহরিয়ার কবির বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন বলে বঙ্গবন্ধু সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করলেই যে তিনি মুক্তিযোদ্ধা থাকবেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করবেন এমন তো কোনো কথা নেই। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারে খন্দকার মোশতাকও মন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি দাবি করে তাদের অনেকে মুক্তিযোদ্ধা। হ্যাঁ মেজর হাফিজ থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ চ্যালেঞ্জ করেছিলেন সংবিধানের যদি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ঢোকানো হয়, তারা ক্ষমতায় গেলে সেটি বাতিল করে দেবেন। ১৭ এপ্রিল আমরা যেমন পালন করব, তেমন ১০ এপ্রিল জাতীয় প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবেও পালন করতে হবে। এতে করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের অপশক্তিকে যদি আমরা নির্মূল করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের আগামীর অগ্রযাত্রাকে কেউ রুখতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে বঙ্গবন্ধুর পাশে সবসময় ছায়ার মতো ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। কিন্তু ইতিহাসে বঙ্গমাতাকে সেভাবে তুলে ধরা হয় না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তার যে অবদান সেটা যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে। বর্তমানে রাজনীতিতে অনেক হাইব্রিড ঢুকে পড়েছে। হাইব্রিড কেউ নেতৃত্বে আসলে ইতিহাস বিকৃত হয়।

শিক্ষার্থীদের বলব সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের যেসব ফিল্ম- তথ্যচিত্র আছে তা দেখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে যেতে হবে। মেহেরপুরে মুজিবনগরে শিক্ষার্থীদের যেতে হবে ইতিহাস জানতে। মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকার গঠনে বঙ্গবন্ধু পূর্বেই নির্দেশনা ও গাইডলাইন দিয়ে গেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠনের পথ তৈরি করে গেছিলেন।

এদিকে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ শীর্ষক সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুর্শিদা বিনতে রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের প্রকৃত ইতিহাস নিজে জানতে হবে এবং অন্যদের জানাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে। সেই সঙ্গে প্রকৃত ইতিহাসের চর্চা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর অবদান সুনিপুণভাবে তুলে ধরতে হবে।

এ ছাড়া আলোচক হিসেবে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে উপায়ে ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলেছে। এখনো গুপ্ত ঘাতকদের অংশ বিশেষরা এই বিতর্ক অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ত্বেই মুক্তিযুদ্ধ হয় এবং দেশ ঘাতক মুক্ত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মোছা. খোদেজা খাতুন।

এসময় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী, শিক্ষক সমিতির নেতারা, নীল দলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়