ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

খালেদার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ট্রল, বিভ্রান্তিতে নেতাকর্মীরা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ১১ মে ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নতুন করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। করোনা টেস্টের রিপোর্টে তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৮ মে দেখানোর পর থেকে বিষয়টি আলোচনায়। ফেসবুকে এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। হচ্ছে ট্রল। টেলিভিশনের রাজনৈতিক টকশোগুলোতেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

প্রশ্ন উঠেছে কোনটা খালেদার আসল জন্মদিন?

বেগম জিয়া দীর্ঘদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টকে নিজের জন্মদিন হিসেবে উদযাপন করে আসছিলেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহল থেকে চরম সমালোচনায় পড়তে হয় বিএনপি ও এর নেতৃত্বকে।

এ বিষয়ে এক বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত বিরক্ত হয়ে বলেন, এটা কোন আলোচনা বা ট্রল বানানোর বিষয় না। এটা নিয়ে বিতর্ক আগেও ছিল। জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিন উদযাপনের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আসলে খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে তার পরিবারই ব্যাখ্যা দিতে পারবেন- কোনদিন তার আসল জন্মদিন।

১৫ আগস্ট ছাড়াও বিভিন্ন দলিলে খালেদা জিয়ার আরও চারটি জন্মদিনের কথাও জানা যায়। একাধিক জন্মতারিখ ও জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিন উদযাপনের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

সর্বশেষ শনিবার খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্টে দেখা যায় জন্মতারিখের স্থানে লেখা- ৮ মে ১৯৪৬ সাল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফায় ওই করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে।

তবে রিপোর্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সেটি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ অনেকেই খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্টটি শেয়ার করেন। জাতীয় শোক দিবসে নিজের জন্মদিন উদযাপন করায় খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান কেউ কেউ।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রোববার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্টটি তুলে দিয়েছেন। রিপোর্টের নিচে স্ট্যাটাস আকারে লাল সাদা হরফে একটি লেখাও তুলে ধরেছেন তিনি। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘মৃত্যুভয়ে খালেদা জিয়া তার আসল জন্মদিনের কথা স্বীকার করলো, খালেদা জিয়ার জন্মদিন ০৮ মে ১৯৪৬।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি। বিষয়টা আমার কাছে যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতেই প্রাসঙ্গিক। এখন আপনি (খালেদা জিয়া) বলছেন, ৮ মে’তে আপনি জন্মেছেন। তাহলে আমাদের রক্তক্ষরণ করিয়ে ১৫ আগস্ট যে জন্মদিন নিজে পালন করে এসেছেন, আপনার দলের নেতাকর্মীরা যে পালন করেছে, আমাদের শোককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, তার জন্য ন্যূনতম ক্ষমা, মানুষ হিসেবে আপনার এবং আপনার দলের নেতাদের চাওয়া উচিত।’

এর আগে ‘ভুয়া’ জন্মদিন উদযাপন ও মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত ও কলঙ্কিত করার অভিযোগে মানহানির দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে কয়েকটি মামলা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ৯ আগস্ট ১৯৪৫। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ের কাবিননামায় ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫।

২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী, তার জন্মদিন ১৯ আগস্ট ১৯৪৫।

এছাড়া খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন উদযাপন করে আসছেন। সর্বশেষ করোনা টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ মে ১৯৪৬ খালেদা জিয়ার জন্মদিন। সব মিলিয়ে ছয়টি তারিখ থাকার কথা জানা গেল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়