ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয়

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১৮ মার্চ ২০২৪  

স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয়

স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয়

মাত্র ৫৪ বছরের জীবনের এক-চতুর্থাংশই কেটেছে কারাগারে; তাঁর পুরো জীবনটাই ছিল বাঙালির জন্য নিবেদিত; সেজন্য ফাঁসির মঞ্চকেও তিনি ভয় পাননি। টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এ মহানায়ক উঠে এসেছেন জাতীয় অঙ্গনে, দ্যুতি ছড়িয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। হয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা। তাই জন্মদিনে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছে বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের সেই স্বাপ্নিক স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানকে।

দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা-জঙ্গিবাদ ও ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের দৃপ্ত শপথে রবিবার বাঙালি জাতি তাঁর প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কৃতজ্ঞ জাতি জাতির পিতার জন্মদিনে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজনৈতিক-সামাজিকভাবে পরাজিত করে দেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত এবং অসাম্প্রদায়িক আধুনিক উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথও নিয়েছেন।

ঢাকাসহ সারাদেশে গোটা জাতি দিনভর অবনত মস্তক আর হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করে হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ধানমন্ডির জাতির পিতার প্রতিকৃতি ও টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন, শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রন্থমেলা, বিনামূল্যে চিকিৎসা, প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনসহ সরকারি-বেসরকারি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয় বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু কিশোর দিবস।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গবন্ধুর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং এর পর পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তাঁরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকা-ের শিকার অন্যান্য বীর শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোটবোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাধি প্রাঙ্গণে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছোটবোন শেখ রেহানা ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান শেখ ফজলুল করিম সেলিম তাঁকে স্বাগত জানান। এর পর জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুও বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শেষে দিনভর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জলিতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের নিয়ে পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর মাজারে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শাজাহান খান, মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, রাজশাহীর সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন. মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পরিকল্পনা মন্ত্রী আবদুস সালাম, গৃহায়ণ মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, ভুমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, শেখ হেলাল এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈমসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসন ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাবউদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ তোফাজ্জল হক টুটুল, গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান হাজরাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও শ্রদ্ধা নিবেদনকালে উপস্থিত ছিলেন।

পরে সেখানে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শিশু সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের জিআই পণ্য ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের তৈরি গহনার স্মারক এবং জিআই পণ্য হিসেবে বিবেচিত গোপালগঞ্জের রসগোল্লাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। বিকেল তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জনতার ঢল ॥ জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে কৃতজ্ঞ বাঙালির ঢল নামে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৭টায় রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময়ে ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়।

পরে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এই সময়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে জমায়েত হতে থাকে। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে উপস্থিত হাজার হাজার নারী-পুরুষের কণ্ঠে উচ্চারিত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘মুজিবের বাংলায় খুনিদের ঠাঁই নাই’ ‘আজকের এই দিনে মুজিব তোমায় মনে পড়ে’ ‘লাল সবুজের পতাকায় মুজিব তোমায় দেখা যায়’-এসব স্লোগানে এলাকার পরিবেশ মুখরিত হয়ে ওঠে।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।

এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, মহিলা শ্রমিক লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু আইন পরিষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিৃকতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রবিবার ভোর থেকে রাত অবধি ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন এবং টুঙ্গিপাড়ায় মাজারে নেমেছিল শ্রদ্ধা জানাতে আসা সর্বস্তরের মানুষের ঢল। সারাদেশেই ব্যাপক ও আনন্দমুখর কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো। সর্বত্র নানা আয়োজনে মানুষের ঢল নেমেছিল। দিবসটি উপলক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পাশাপাশি রাজধানীসহ সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শের ওপর আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বইমেলা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর ওপর তৈরি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

জাতির পিতার জš§দিন পালনে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি দেশবিরোধী অপশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা ও কূপমন্ডু কতার বিরুদ্ধে লড়াই করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক সোনার বাংলা গড়ে তোলার দুর্জয় প্রেরণা ও ইষ্পাতকঠিন প্রত্যয় ছিল শ্রদ্ধা জানাতে আসা সারাদেশের কৃতজ্ঞ বাঙালি কণ্ঠে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে রাজপথে অতন্দ্র প্রহরীর মতো থাকার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তারা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়েছে। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ সকল গণমাধ্যম বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে দিবসটি যথাযথভাবে উদ্্যাপন করা হয়।

স্বাধীনতার মহানায়কের জন্মদিন উপলক্ষে রবিবার বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদসহ সারাদেশের মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আলোচনা সভা, কোরআনখানি, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়, মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থণা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডাকটিকিট, উদ্বোধন খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার গণভবনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকাশিত এসব প্রকাশনা অবমুক্ত করা হয়। এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ॥ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে মেয়র আতিকুল ইসলাম রাজধানীর গুলশান-২ এ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মূল ফটকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ডিএনসিসির সব কর্মকর্তা, কাউন্সিলর, ডিএনসিসি শ্রমিক লীগ, ডিএনসিসি স্ক্যাভেঞ্জার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, ডিএনসিসি পরিবহন চালক-শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ ইউনিয়ন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে নগর ভবনের হলরমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, পাল, সেন, সুলতান, মোঘল, আফগান, ইংরেজ শাসন যাই বলি না কেন, হাজার বছর পরাধীনতার গ্লানি বয়ে বেড়িয়েছে এ জাতি। স্বাধীনতা ছিল আজন্ম চাওয়া। কেউ স্বাধীনতা দিতে পারেনি। কেবল স্বাধীনতা দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির দীর্ঘ দিনের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। যার তর্জনীর ইশারায় মুক্তিপাগল মানুষ সমুদ্রের মতো জেগে উঠেছিল। ছিনিয়ে এনেছিল এই দেশ, এই স্বাধীনতা, একটি স্বাধীন মানচিত্র।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হাসিনা বারী চৌধুরী, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়