ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪ ||  চৈত্র ৩১ ১৪৩১

ছয় খাতে বাণিজ্য চায় কোরিয়া

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০১, ৫ এপ্রিল ২০২৪  

ছয় খাতে বাণিজ্য চায় কোরিয়া

ছয় খাতে বাণিজ্য চায় কোরিয়া

বাংলাদেশে আরও বাণিজ্য বাড়াতে ছয় খাতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তির (এমওইউ) প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি বলছে, দুই দেশ মুক্তবাণিজ্য চুক্তিতে যাওয়ার আগে এই এমওইউ সম্পন্ন করতে পারে- যাতে করে আরও বেশি কোরিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হয়।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে সমঝোতা চুক্তির একটি খসড়া পাঠানো হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। সংশ্লিষ্ট দফতর সেই খসড়া পর্যালেচনা করছে। খসড়ায় কোরিয়া যে ছয় খাতে অংশীদারির প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো হলো : বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধি ও শুল্ক সহজীকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) সহায়তা, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, পণ্যের সরবরাহ খাতে (সাপ্লাই চেইন) শৃঙ্খলা আনতে সহায়তা, ডিজিটাল ও গ্রিন ইকোনমিতে অর্থনৈতিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং দুই দেশের শিল্পোন্নয়নে সহায়তা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ জোরদারে বেসরকারি খাতের একটি বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। দেশ দুটির শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কোরিয়া ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোইমা)-এর মধ্যে ওই চুক্তিটি হয়েছে গত নভেম্বরে। এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী এবং কোইমার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কিম বিয়ং-কোয়ান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেসরকারি খাতের ওই চুক্তির সূত্র ধরেই এখন দুই দেশের সরকারের মধ্যে অনুরূপ একচি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দিয়েছে কোরিয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে চায়। তারই অংশ হিসেবে তারা বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শিল্প খাতের উন্নয়নে তারা সহায়তা করছে। এখন সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে কী ধরনের সহায়তার প্রস্তাব রয়েছে-তা না জেনে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে কোরিয়ার বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে। চট্টগ্রামে কোরীয় ইপিজেড রয়েছে। এর বাইরেও স্যামসাং (মোবাইল) হুন্দাইয়ের মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে এসেছে। তারা এসব কোম্পানির টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের দেশের আরও কোম্পানির বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরেছে। এজন্য দেশটি কিছু বাণিজ্য বাধাসহ কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চ শুল্কহার কমানোর সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশের পাশাপাশি কোরিয়া চাইছে তারা বাংলাদেশের ডিজিটাল ইকোনমির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব (গ্রিন ইকোনমি) সবুজ অর্থনীতিতে সহায়তা বাড়াতে। এ ছাড়া ভারী শিল্পের পাশাপাশি এসমইএ শিল্পেও ব্যাপক দক্ষতা রয়েছে কোরিয়ার। এ বিষয়গুলোতে সহায়তা করতেই তারা দুই দেশের সরকারের মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৩ দশমিক ০৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। ২০২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ১৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিপক্ষীয় এই বাণিজ্য কোরিয়ার অনুকূলে। বাংলাদেশ দেশটিতে ১ বিলিয়ন ডলারের কম পণ্য রপ্তানি করলেও আমদানি করে চার গুণের বেশি। ২০২২ সালে দেশটি থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়