১২ জুন ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ভারতে বাংলাদেশী শরণার্থীর সংখ্যা ৫৮ লাখ
ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
নিজ ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে জীবন বাঁচাবার তাগিদে ভারতের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেয়া বাংলাদেশের শরণার্থী সংখ্যা এদিন ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ১৭২ জনে উন্নীত হয়। এখনও প্রতিদিন ৬০ হাজার করে মানুষ আসছে এবং এই সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সংখ্যা ১ কোটিতে গিয়ে ঠেকতে পারে।
প্যারিসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুমা বাংলাদেশ ও উদ্বাস্তু পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যারা আমাদের শিশু ও নারীদের খুন করছে তাদের আমরা কোনোদিন ক্ষমা করতে অথবা তাদের অপরাধ ভুলে যেতে পারবো বলে কি মনে করেন? নিশ্চয় না। এই গণহত্যার পর দেশের দুই অংশের একসঙ্গে থাকার আর কোনো প্রশ্নই উঠে না। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, পূর্ব বাংলার জনগণ এখন একটি মাত্র সমাধান মেনে নিতে পারে, তা হলো, পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিকে মুক্তিদান এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের জন্য তাদের একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে দেয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে নিশ্চয়ই টিকবে এবং বাংলাদেশ হবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, পাকিস্তানের মতো এক ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়। আমার বিশ্বাস, ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে গণ্য হবে এবং সরকার হবে ধর্মনিরপেক্ষ।
পাকিস্তান সফররত বৃটিশ পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি দলের সদস্য জেম কি ইর্ডার বলেন, এটা পরিষ্কার, উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তন সুগম করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে অবশ্যই স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা একান্ত আবশ্যক। বৃটিশ জনগণ ও সরকার পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ইউএনআই এদিন জানায়, ‘সারা বাংলাদেশ জুড়ে শেখ মুজিবের মুক্তিফৌজ গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে বলে সীমান্তের ওপারে মুক্তিবাহিনীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে খবর এসেছে। সীমান্তের ওপার থেকে জানা গেছে, মুক্তিফৌজ পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক, জজ কোর্ট এবং টাউন হল ভবনে গ্রেনেড আক্রমণ চালায়। গেরিলা বাহিনী কুমিল্লা শহরের দক্ষিণাঞ্চলে একটি রেল ইঞ্জিন উড়িয়ে দিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুত কেন্দ্রটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
টাঙ্গাইলে কালিহাতীর বল্লায় কাদেরিয়া বাহিনীর সঙ্গে পাকহানাদার বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকবাহিনী প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করে পিছু হটে। সিলেটের এনায়েতপুরে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পাক হানাদার বাহিনী প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করে। নওগাঁয় পাকসেনাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কন্যা বেগম আখতার সোলায়মান বাংলাদেশের সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া সকল এমএনএ এবং এমপিএ-দের গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার সুযোগ গ্রহণ করে নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান।
- কেমন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম আদমশুমারি
- যেভাবে মরুভূমি থেকে শীর্ষ ধনী দেশ কাতার
- দেশে উৎপন্ন ‘আগর আতর’ বিশ্বে মহামূল্যবান
- ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: আজকের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা
- নববধূকে যে কারণে লাল শাড়ি পরানো হয়
- ২৭ নভেম্বর ১৯৭১: আজকের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা
- তিনটি হৃৎপিণ্ড নিয়ে বেঁচে আছে এই প্রাণী
- হতাশাই পুঁজি, লোক হাসিয়েই স্বাবলম্বী শামস চৌধুরী
- করোনায় আক্রান্ত হলেই আলো জ্বলবে মাস্কে
- বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস আজ