ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্বাধীনতার প্রতীকী শিশু শেখ রাসেল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১৮ অক্টোবর ২০২১  

শেখ রাসেল

শেখ রাসেল

বাংলাদেশের পতাকা হাতে শেখ রাসেলের একটা ছবি আছে। ইন্টারনেটে অনেকেই দেখে থাকবেন। আবার অনেকে নাও দেখতে পারেন। গুগল সার্চ করে ছবিটি দেখুন। ছবি কথা বলে, কিছু ছবি বিশেষ অর্থ বহন করে, কিছু ছবি সময় ও ইতিহাসের প্রতীকে পরিণত হয়। শেখ রাসেল তেমনই এক শিশু, যে মহাকালের বুকে বাঙালি জাতির শৈশবের প্রতীক হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছে। একদিকে চিরায়ত দুরন্তপনা, অস্থির চঞ্চলতা, নিবিড় চপলতা; অন্যদিকে জীবনসংসারে কষাঘাতের প্রতিবন্ধকতা, বাঙালির শিশুর বুকের ভেতর গোপন করা কথামালা। একদিকে যেমন ভরপুর উচ্ছ্বলতা, অন্যদিকে ঠিক তেমনই গুমোট চাপাস্বভাব– এসব নিয়েই বেড়ে ওঠে আবহমান বাংলার প্রতিটি শৈশব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল আমাদের ফেলে আসা সেইসব শৈশবের প্রতীক। 

একইসঙ্গে, বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকের প্রতিটি ঘটনার সাক্ষী হয়ে বেড়ে ওঠে ছোট্ট রাসেল। মুক্তির উত্তাল হাওয়া ও স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর জাতির চোখের আলো মেখে ক্রমেই তার বেড়ে ওঠা। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর, হেমন্তের এক প্রহরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে তার জন্ম। বড় বোন শেখ হাসিনা তথা তার প্রিয় হাঁসু আপার শয়ন কক্ষে বঙ্গমাতার কোলজুড়ে যখন চাঁদ হয়ে এলো সদ্যোজাত রাসেল, বঙ্গবন্ধু তখন স্বৈরাচার আইয়ুববিরোধী আন্দোলনকে সংগঠিত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন চট্টগ্রামে। 

সময়টা ছিল ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। দেশজুড়ে তখন ক্রমেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। বঙ্গবন্ধু ব্যস্ত মুক্তিকামী জাতিকে চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করতে। বঙ্গমাতা ব্যস্ত পরিবারের মাথাগোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতে। ছোট্ট রাসেল বেড়ে উঠতে থাকলো বোন শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালের আদরের পুতুল হয়ে। বড় বোন শেখ হাসিনার লম্বা চুলের বেণীতে দোলা খেতো সে। ঘরময় ঘুরে বেড়াতো, পোষা পায়রাকে খাবার দিতো ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে। রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে মাঝে মাঝে দেখে আসতো মাকে।

জেলগেটে দেড় বছরের ছোট্ট রাসেল  

এরমধ্যেই চলে এলো ১৯৬৬ সাল। ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধীদলীয় সভায় বঙ্গবন্ধু ছয় দফা পেশ করলেন। এই সময়টাতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আশায় তীব্র জাগরণ শুরু হলো সারা দেশে। ছাত্র–জনতা–শ্রমিক–কৃষক সবাই একযোগে নেমে এলো রাজপথে। বঙ্গবন্ধু ঘুরতে থাকলেন প্রতিটি জেলার আনাচে কানাচে। ভীত হয়ে গেলো পাকিস্তানি শোষকরা। ফলে ৮মে রাতে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। শিশু রাসেলের বয়স তখন মাত্র দেড় বছর। বাবাকে একনজর দেখতে মায়ের কোলে চড়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের যেতে হতো তাকে।  বাবাকে রেখে আর আসতে চাইতো না। অবশেষে রাসেলকে বোঝানো হয়েছিল যে, জেলটাই তার বাবার বাড়ি। পিতার অবর্তমানে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত রাসেল নিজের ‘আম্মা‘কেই ‘আব্বা‘ বলে ডাকতে শুরু করেছিল। কী নিদারুণ এক শোকাবহ শৈশব! বঙ্গবন্ধু তার ‘কারাগারের রোজনামচা‘ গ্রন্থে শিশু রাসেলের স্মৃতি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। 

জেলবন্দি বঙ্গবন্ধুকে আরো বিপদে ফেলতে পাকিস্তানিরা ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি আগরতলার তথাকথিত ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। সেই মামলায়, ১৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তার দেখানো হয় বঙ্গবন্ধুকে। ছয় দফায় পর ক্রমেই জাগরিত হতে থাকা জনতা এবার ফুঁসে ওঠে। তীব্র গণআন্দোলন গড়ে ওঠে দেশজুড়ে। অবশেষে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এই মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানিরা। ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় লাখো জনতার উল্লসিত কন্ঠে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন সাতকোটি বাঙালির একক কণ্ঠস্বর। শেখ রাসেলের বয়স তখন প্রায় সাড়ে চার বছর। পিতার কোলে উঠে আর নামতেই চায় না সে। বাড়িতে নিয়মিত রাজনৈতিক বৈঠক ও সড়কে মিছিলের স্লোগান শুনে আধো আধো বুলিতে বেশ কিছু স্লোগানও শিখে ফেলে সে ততদিনে। 

সাড়ে ছয় বছর বয়সেই বন্দি জীবন  

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে যখন রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন বঙ্গবন্ধু, ছোট্ট রাসেল তখন মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে দেখে আসতো তার প্রিয় ‘আব্বা‘কে। মনে হয়তো ভয় কাজ করতো, বাবাকে আবার কে না কে নিয়ে যায়! 

এরমধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের প্রচার–প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও নৌকাকে একচেটিয়া ম্যান্ডেট দেয় জনগণ। কিন্তু পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্র শুরু করে। ফলে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার রণকৌশল ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালি জাতি তাকে স্বাধীন জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা করেছে ততদিনে। এরপর ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি জান্তারা যখন ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করা হয়। 

মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে রণাঙ্গণে চলে যান বঙ্গবন্ধুর দুই পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল। ধানমণ্ডির ১৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা, তার অন্তঃসত্ত্বা কন্যা শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সাড়ে ছয় বছরের শিশু শেখ রাসেলকে। আকাশে যুদ্ধ বিমানের মহড়া শুরু হলে কানে তুলা গুঁজে রাখতো ছোট্ট রাসেল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ‘আমাদের ছোট্ট রাসেল সোনা‘ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। শোষণমুক্তির সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল পরিবেশে বেড়ে ওঠা শেখ রাসেল বড় হয়ে একজন দেশপ্রেমিক আর্মি অফিসার হতে চেয়েছিল। 

অবচেতনে বেড়ে ওঠা সচেতনতা 

জুলফিকার আলী ভুট্টো, বাঙালি জাতিকে শোষণে যার ভূমিকা খুবই ঘৃণ্য। এমনকি ১৯৭০ এর নির্বাচনে পরাজয়ের পরও সে বাঙালির জয় মেনে নিতে পারেনি। বাঙালি জাতিকে শোষণ করার প্রতীকে পরিণত হয়েছিল সে। তার প্রভাব পড়েছিল শিশু শেখ রাসেলের মনে। ওই বয়সে সে হয়তো অতো রাজনীতি বুঝতো না। কিন্তু বিভিন্ন স্লোগান ও আলোচনার কথা শুনে এটা বুঝতে শিখেছিল যে– ভুট্টো নামটা একটা নেতিবাচক শব্দ, এটা একটা রক্তপিপাসু শোষকের নাম।  

কালো পিঁপড়া ধরতে পছন্দ করতো ছোট্ট রাসেল। একবার বড় আকারের এক কালো পিঁপড়া (ওলা) কামড়ে দিলো তাকে। ফুলে গেল আঙ্গুল। ওই আক্রমণকারী বড় কালো পিঁপড়ার নাম দিল সে ভুট্টো। যুদ্ধমুখর দেশে, রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা শৈশবে, অবচেতনভাবেই এক তীব্র সচেতনতা বোধের সৃষ্টি হচ্ছিল ছোট্ট রাসেলের মনে।

স্বাধীনতার পর যখন সে টুঙ্গিপাড়ায় যেতো, গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য কাপড় কিনে দিতে বলতো। তার আবদার রাখতে তাদের জন্য কাপড় কিনে নিয়ে যেতে হতো বঙ্গমাতাকে। গ্রামের শিশুদের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতো সে। প্যারেড করাতো লাইনে দাঁড় করিয়ে। তারপর খেলা শেষে সবাইকে চকলেট দিতো। নেতৃত্ববোধটাও অবচেতন মনেই অঙ্কুরিত হচ্ছিল। 

আবার বাবা ও বোন শেখ রেহানার সঙ্গে যখন বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিল ছোট্ট রাসেল, তখন প্রিন্সকোট পরা এই শিশুর ব্যক্তিত্বে বিমোহিত হয়েছেন বিশ্ব নেতারা। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফরে যান বঙ্গবন্ধু। রাসেলের বয়স তখন মাত্র ৯। কিন্তু তার প্রাণবন্ত কিন্তু পরিমিত হাসি, আত্মবিশ্বাসী চাহনি, করমর্দনের স্টাইল– সবকিছুর মধ্যেই ফুটে উঠেছিল একজন ভবিষ্যত নেতার ছাপ। আবার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের বেঞ্চে যখন সে বসতো, তখন হয়ে যেতো সহপাঠীদের খুব নিকটজন। বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া টিফিনটাও ভাগ করে খেত বন্ধুদের সাথে। অধিকাংশ শিশুদের মতোই ভাত খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কম ছিল তার। তবে রান্নাঘরে কাজের মানুষরা যখন খেতে বসতো, তখন লাল ফুল–তোলা প্লেট নিয়ে তাদের সঙ্গে খেতে বসে যেত সে।  

বাঙালির শৈশবের প্রতীক  

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বাঙালির বাঁচার দাবি ছয় দফা প্রণয়ন, ঊনসত্তরের গণআন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশগঠনের প্রচেষ্টা– এতোসব কর্মমুখর সময়ের মধ্যে যার জন্ম ও বেড়ে ওঠা, তার নাম শেখ রাসেল। বাঙালি জাতির জন্মলগ্নের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোজুড়ে ডানা মেলেছে তার শৈশব। বাল্যকালেই যে সচেতনতা ও কোমল ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল তার যাবতীয় কর্মকাণ্ডে, বেড়ে ওঠার সুযোগ পেলে হয়তো সে আজ বিশ্বব্যাপী পরিচিত কোনো মানবদরদী নাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতো, হয়তো হতে পারতো একজন দেশপ্রেমিক সামরিক অফিসার, হয়তো হতে পারতো আধুনিক বাংলাদেশের একজন উজ্জ্বল পথিকৃৎ।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির আঘাতে ভেঙে পড়ে সবকিছু। বর্বর ঘাতকদের বুলেটে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যায় দশ বছর দশ মাস বয়সী রাসেলের জীবনও। কী দোষ ছিল তার! কার ক্ষতি করেছিল সে! শুধু বঙ্গবন্ধুর পুত্র হওয়ার কারণেই অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে তাকে। ঘাতকরা সবাইকে হত্যার পর, রাসেলকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে। এমন নৃশংসতার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল হায়েনার দল বাংলার বুক থেকে। কিন্তু বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। 

এগারতম জন্মদিনের আগে, যে শিশু রাসেলকে ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, সেই রাসেলের স্মৃতি আজও কাঁদিয়ে ফেরে বাংলার মানুষকে। সেই রাসেল আজ পরিণত হয়েছে বাংলার প্রতিটি মানুষের দুরন্ত শৈশবের প্রতিচ্ছবিতে। একটা সাইকেলের দুরন্ত গতি, প্রজাপতির অস্থির রঙিন ডানা, কিংবা নীরব অভিমান বুকে গুমোট বেঁধে রেখে একাকী ছলছল চোখ লুকানো, কখনোবা বিশ্বজয়ীর দৃষ্টি মেলে বড়দের দিকে তাকানো, পোষা পশুপাখিকে আদর করে খেতে দেওয়া, সবকিছু মিলিয়ে আবহমান বাংলার প্রতিটি শিশুর হাসি–কান্নামাখা শৈশবই যেন ধারণ করে আছে ছোট্ট রাসেল। তার বয়স থেমে গেছে। বাঙালি জাতির চিরায়ত শৈশবের প্রতীকে পরিণত হয়েছে সে। অদম্য বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় প্রতিটি শিশুই অনুপ্রেরণা পাক রাসেলের জীবন থেকে। নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠুক মুক্তির পরশ ছুঁয়ে।    

আর একটি শিশুও যেনো বর্বরতার শিকার না হয়

বিশ্বব্যাপী শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে, ১৮ অক্টোবর, শেখ রাসেলের জন্মদিনকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর আর একটি স্বপ্নকুঁড়িও যেনো বর্বরতার শিকার হয়ে অকালে ঝরে না যায়, একটি শিশুও যেন নৃশংসতার শিকার না হয়, সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করার দায়িত্ব আপনার–আমার সবার।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়