ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি দূর করবে যে সেতু

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ৪ নভেম্বর ২০২৩  

লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি দূর করবে যে সেতু

লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি দূর করবে যে সেতু

মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মিত বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘লিটন চৌধুরী সেতু’ উদ্বোধন হবে আজ শনিবার (৪ নভেম্বর)। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে উৎসবের আমের বিরাজ করছে উপজেলার মানুষজনদের মাঝে। কারণ, সেতুটির মাধ্যমে ভোগান্তি দূর হবে লক্ষাধিক মানুষের। স্থানীয়দের যোগাযোগব্যবস্থায় যোগ হবে নতুনমাত্রা। জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটবে বলেও আশাবাদী অনেকে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সেতুটি উদ্বোধন হলে শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল, নিলখী, দত্তপাড়া ইউনিয়ন ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা, আজিমনগর এবং মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর, হোসেনপুর এলাকাসহ আশপাশের লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তির অবসান ঘটবে। এসব ইউনিয়নের প্রায় সবগুলো গ্রামকে শহর থেকে সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে আড়িয়াল খাঁ নদ।শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকালে সরেজমিনে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উদ্বোধন উপলক্ষে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশপাশের লোকজন সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ স্থাপন হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সদরে পৌঁছানো যাবে এই সেতু দিয়ে। শুধু তাই নয় শিবচর রেলস্টেশন থেকে সহজেই যেতে পারবে নিজ গন্তব্যে। ফলে নদীর পাড়ের মানুষের ব্যবসায়-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে।শিবচর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯ দশমিক ৮০ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এতে স্প্যান সংখ্যা ১১টি এবং পিলার সংখ্যা ৯টি। সেতুটির পাইলের সংখ্যা ১২৩টি, পাইলের দৈর্ঘ্য ৪৮ মিটার। সেতুর জন্য অ্যাপ্রোচ সড়কের (সংযোগ সড়ক) দৈর্ঘ্য এক দশমিক ৫০ কিলোমিটার। ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. মইন উদ্দীন বাঁশি ও হা-মিম ইন্টারন্যাশনাল।

স্থানীয়রা জানান, আড়িয়াল খাঁ নদ পার হয়ে শিবচরসহ ঢাকা যেতে তাদের নৌকায় বা ট্রলারে যেতে হতো। বর্ষায় উত্তাল নদী আর অধিক যাত্রীর জন্য ট্রলার চালকদের অধিক সময় ঘাটে বসে থাকতে হতো। এ ছাড়া ট্রলার না পাওয়াসহ নানাবিধ ভোগান্তি মাথায় নিয়ে শিবচর যেতে হয় এই অঞ্চলের মানুষের। অনেক সময় নদীর কারণে রোগী ও মালামাল নিয়ে রাজৈর বা ফরিদপুর যেতে হতো তাদের। সেতুটি উদ্বোধনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করছেন তারা। 

নিলখী ইউনিয়নের চরকামারকান্দি এলাকার ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন শিকদার বলেন, ‘আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে আমাদের বাড়ি। নদী পারাপারের ঝামেলার কারণে আমাদের এলাকার অনেক লোক  শিবচরে জমি কিনে বাড়ি করেছে। এ ছাড়া উপজেলা সদরের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম আমরা। সেতুটি আগে হলে আমাদের আর কষ্ট করতে হবে না।’

উৎরাইল এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নদী পার হওয়ার জন্য অনেক সময় জরুরি কাজেও শিবচর যেতে পারিনি। আমাদের এলাকার শিক্ষার্থীদের উপজেলা সদরে যেতে অনেক দূর ঘুরতে হয়। সেতু চালু হলে সহজেই তারা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। তা ছাড়া এলাকার মানুষ অনেকভাবে উপকৃত হবেন।’

তৌকির আহমেদ চৌধুরী অলিক নামে একজন বলেন, ‘নদীর পাড়ে উতরাইল এলাকায় আমার বাড়ি। মাত্র ১০ মিনিটের পথ উপজেলা সদর। কিন্তু আড়িয়াল খাঁ নদ আমাদের উপজেলা সদর থেকে বিভক্ত করে রেখেছে। ইনশাআল্লাহ, আজ থেকে আমাদের ভোগান্তির অবসান হবে। আমরা চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী মহোদয়ের নিকট বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।’

শিবচর উপজেলা প্রকৌশলী কে এম রেজাউল করিম বলেন, ‘জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী এমপি মহোদয় আজ সেতুটির উদ্বোধন করবেন। সেতুটির মাধ্যমে মাদারীপুরের রাজৈর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার লোকজন শিবচর হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকা যেতে পারবে। এই এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজেই বাজারজাত করতে পারবে।’

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়