ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রূপকথার মতো নীল রঙে রাঙা মরোক্কোর শেফচাউইন শহর

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ৬ মে ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

রূপকথার মতো মনে হলেও বাস্তবে এমন একটি শহর রয়েছে। বাড়ি, ঘর, দরজা, জানালা, শহরের সবকিছুই নীল রঙে রাঙা। দেখলে মনে হয়, কেউ বুঝি আপন মনে আকাশের রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে। মরোক্কোর উত্তর-পশ্চিমের একটি শহর হলো শেফচাউইন। আর এ শহরটি একেবারেই রূপকথার রাজ্যের মতো। মনেই হবে না আপনি পৃথিবীর কোনো স্থান দেখছেন! সত্যিই কল্পনার এক স্বর্গরাজ্য হলো শেফচাউইন।

মরোক্কোর টাঙ্গিয়ার এবং তাতোয়ান থেকেও ভেতরের দিকে শেফচাউইন অবস্থিত। এ শহরটির বিশেষত্ত্ব হলো এর নীল রং। শহরের সব বাড়ি ঘর একই রঙের। এমনকি পুরো শহরের রাস্তা সবই নীল রঙে আচ্ছাদিত। এ কারণে সারাবছর পর্যটকের আনাগোনা এখানে লেগেই থাকে। তবে গ্রীষ্মের সময় বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে শেফচাউইনে আসেন সবাই। এর মধ্যে এবচেয়ে বেশি থাকেন ইউরোপীয়রা।

পর্যটকদের থাকার জন্য ২০০ হোটেল আছে সেখানে। শেফচাউইনে গেলে আপনি খালি হাতে ফেরার কথা ভাবতেই পারবেন না। কারণ শেফচাউইন শপিং গন্তব্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মরোক্কোর দেশীয় হস্তশিল্প শুধু শেফচাউইনেই পাওয়া যায়। যেমন- উলের পোশাক এবং বোনা কম্বল। এই অঞ্চলের ছাগলের পনির পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।

মরোক্কোর ‘নীল মুক্তো’ হিসেবে পরিচিত শেফচাউন শহরটি। ১৪৭১ সালে আবদুল-সালাম আল-আলামী এবং ইদ্রিস প্রথমের বংশধর মৌলে আলী আলী ইবনে রশীদ আল-আলামী এই শহরে একটি ছোট কাসবাহ (দুর্গ) প্রতিষ্ঠা করেন। আল-আলামি উত্তর মরক্কোর পর্তুগিজ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

শেফচাউনে গেলে দেখতে পাবেন, সেখানকার সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহাসিক গ্রেট মসজিদ। যার অবস্থান উটা হাম্মামে। শহরের পূর্বদিকে একটি পাহাড়ের উপরে আছে ১৯২০ সালে স্প্যানিশ দ্বারা নির্মিত একটি মসজিদ। পাহাড়ের উপর উঠে এই মসজিদে গিলেই পুরো শহর এক ঝলে দেখা যায়।

মরোক্কোর শেফচাউইনেই রয়েছে কেফ টোগোবিট গুহা। যা আফ্রিকার গভীরতম গুহাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়াও সেখানকার নীলচে সৌন্দর্য পাগল করে সবাইকে। শেফচাউনের নীল দেয়ালগুলো বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে এর রহস্য কী?

শেফচাউইন শহরটি নীল হওয়ার কারণ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব আছে। একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব হলো নীল রং মশাকে দূরে রাখে। এ ছাড়াও বলা হয়, নীল আকাশ হলো স্বর্গের প্রতীক। নীল রং মনকে শান্ত করে এবং আধ্যাত্মিক জীবনের অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। তবে স্থানীয়দের মতে, ১৯৭০ সালে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেই এ শহরের দেয়ালগুলোর রং নীল করা বাধ্যতামূলক হয়েছিল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়