বিএনপির কাছে খালেদা জিয়া রাজনৈতিক পুতুল

২০০৭ সালের পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। ২০১৩ সাল থেকে বারবার ঈদের পরে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও, আন্দোলন বেগবান করতে পারেনি বিএনপি। এমতাবস্থায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাবার পরও অসংখ্যবার আন্দোলনের ডাক দিয়েও কোনো সুসংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। কিন্তু কেন এমনটি হচ্ছে, আর কেনই বা কোনো আন্দোলন সংগঠিত করতে পারছে না বিএনপি?

এ প্রসঙ্গে বাংলা নিউজ ব্যাংকের এই প্রতিবেদকের কথা হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বলতে দ্বিধা নেই, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির দুর্নীতির ফিরিস্তি আজও সাধারণ মানুষ ভুলে যায়নি। যতবারই বিএনপি সাধারণ মানুষের কাছে গিয়েছে, ততবার সাধারণ মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ বিএনপি দেশের জন্য এমন কিছুই করেনি যার কারণে জনগণ তাদের পাশে দাঁড়াবে। আর এ কারণেই বিএনপি আন্দোলন সংগঠিত করতে পারছে না। এছাড়া বিএনপির নেতাদের অধিকাংশই ক্ষমতা পাগল। একজন অপরজনকে টপকিয়ে বড় হতে চায়, তা আরো একটি বড় সমস্যা।

বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরো বলেন, বিএনপি বর্তমানে নেতৃত্ব সংকটে রয়েছে। তারা যতোই চেষ্টা করুক কিছুই করতে পারবে না। কারণ তৃণমূলের নেতারা জানেই না, বিএনপির মূল চাবিকাঠি কার হাতে। তৃণমূলের কেউ কেউ তারেক রহমানের কমান্ড ফলো করেন, আবার অনেকে মির্জা ফখরুলের কমান্ড ফলো করেন। এদিকে নতুন করে বিএনপির একাংশ ইশরাক হোসেনের কমান্ড ফলো করছেন। ফলে বিএনপির অভ্যন্তরে একটি হ-য-ব-র-ল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য তাদের দ্বারা আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন ভিন্ন কথা। মির্জা ফখরুল বলেন, নেতাকর্মীরা যেকোনো উপায়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়, তার সুচিকিৎসা চায়। এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের জন্য শীর্ষ নেতাদেরকে চাপ দিচ্ছে। দলের অভ্যন্তরে অন্তর্কোন্দল থাকলেও সর্বোপরি আগামীতে জোরালো আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

বিএনপির বর্তমান অবস্থাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, যাদের একদিনে হয় না, তাদের ১০ দিনেও হয় না। দীর্ঘ ১৪ ধরে বিএনপি চাচ্ছে আন্দোলন করতে, কিন্তু তা সংগঠিত করতে পারছেন না। অথচ ঠিক একইভাবে বিএনপি আন্দোলনের কথা মুখে মুখে বলেই যাচ্ছে। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে, তা মোটেও সম্ভব হবে না। কারণ, দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে দেশের মানুষ কখনোই থাকেনি, থাকবেও না। এছাড়া বিএনপির গঠনতন্ত্র এখনো শক্তিশালী হয়নি। ফলে বর্তমান সময়ে বিএনপির আন্দোলন আকাশ-কুসুম স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে।