ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

বিএনপি সকল ধর্মের মানুষের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য কলকাঠি নাড়ছে: হানিফ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০৪, ১৭ অক্টোবর ২০২১  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জামায়াত ইসলামী নামের অপরাজনৈতিক দল পাকিস্তানের দোসর হয়ে গণহত্যা চালিয়েছিলো। তাদের ছত্রছায়ায় আজ দেশে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী আস্ফালন দেখাচ্ছে। আর সকল ধর্মের মানুষের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য বিএনপি কলকাঠি নাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।

রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে লালন ফকিরের ১৩১তম তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিজয়া দশমী পার হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শারদীয় দূর্গাপুজা উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে পালন করেছেন। আমরা এই বাংলাদেশ চাইনি। মানুষ মানুষের জন্য কাজ করবে। কিন্তু দেশে আজ হানাহানি করে মানুষকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেক ধর্মে কল্যাণের কথা বলা হয়েছে, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার কথা হয়েছে। ধর্মের বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য দেশ স্বাধীন করেছি। সকল ধর্মের মানুষের রক্তে ভেজা মাটি এই বাংলাদেশ। কোনো গোষ্ঠী একা যুদ্ধ করেনি। কোনো এক গোষ্ঠীর আস্ফালনে মানুষের জীবন বিপন্ন হবে, সমাজ কলুষিত হবে। তাদের কুকর্ম বরদাশত করা হবে না।

তিনি বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে হানাহানি, খুনোখুনি, লুটতরাজ, সম্পত্তি দখল ছাড়া কিছুই করতে পারেনি তারাই সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য মদদ দিচ্ছে। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি বাঁধাগস্ত করা এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য বিএনপি পেছন থেকে মদদ দিচ্ছে। এসব বরদাশত করা হবে না।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সবাইকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে নিয়ে সোনার বাংলা। আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য। এই দেশ গড়তে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভমহানি হয়েছে। আজ সেই দেশে একটা ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের মানুষের উপর আঘাত করছে। এটা তো আমাদের কাম্য ছিলো না। আমরা কখনো আশাও করি না।

হানিফ বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বিদায়ী হজ্জে বলে গেছেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। উনি বারবার বলেছেন অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার কথা। মানুষের মনকে জয় করে কাছে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু আজকে আমরা মন্দিরে হামলা, অন্য ধর্মকে অশ্রদ্ধা করছি। শান্তির ধর্মে বিশ্বাসীরা আমাদের শান্তির ধর্মকে কলঙ্কিত করে যাচ্ছে। আমাদের ভাতৃত্বের সম্পর্কও নেই।

তিনি বলেন, তথাকথিত মাদরাসা শিক্ষার উপর ভিত্তি করে দেশ বিখ্যাত হয়েছেন তারা বিদেশি শক্তির প্ররোচণায় এবং আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের কু-প্ররোচণায় সমাজে হানাহানি সৃষ্টি ও পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য মন্দিরে হামলা চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, এই বাংলার হাজার বছরের সংস্কৃতি আছে, শত বছরের কৃষ্টি আছে। আমরা যাত্রা, পালাগান, জারি-সারি, পল্লিগীতি, লোক সংস্কৃতির চর্চা করে এসেছি। আজ আমরা কোথায় চলে এসেছি। সমাজকে হীন মানসিকতা, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে লালন সাই যে আদর্শ প্রচার করে গেছেন তা ধারণ করতে হবে। তার বাণীকে অনুধাবন করতে হবে।

স্বাধীন রাষ্ট্রে যারা অপকর্ম করতে চান তাদেরকে পাকিস্তান চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে হানিফ বলেন, শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশ। কবি নজরুল-রবীনদনাথ ঠাকুরের বাংলাদেশ, মীর মোশাররফের বাংলাদেশ, লালন সাইয়ের বাংলাদেশে আমরা সম্প্রীতি বজায় রাখবো। এটাই আমাদের মূল চেতনা। এ-ই দেশে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প বরদাশত করা হবে না। সম্প্রীতি বিনষ্ট কাজ করে এমন অপশক্তির ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, যে শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের ধর্মের মূল চেতনা থেকে কুসংস্কারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেই শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। যে রাজনৈতিক দল সমাজকে ছিন্নভিন্ন করার জন্য, সম্পীতি নষ্ট করার জন্য্য পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাধীন রাষ্ট্রে অন্যের ধর্মে আঘাত করে এমন অপশক্তিকে বরদাশত করা যাবে না।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়