ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘বদলে যাবে বদলে দিবে’ স্লোগান সামনে রেখে বিটিভির গণমুখী পরিকল্পনা

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৪১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০  

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

৫৬ বছরে পা রাখলো বাংলাদেশ টেলিভিশন। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন ঢাকা শহরের ডিআইটি ভবনের নিচতলায় এনইসি (নিপ্পন ইলেকট্রিক কোম্পানি) জাপানের সহায়তায় বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভির যাত্রা। তখন নাম ছিল পাকিস্তান টেলিভিশন। ১৯৬৭ সালে টেলিভিশন করপোরেশন ও স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে সরকারি গণমাধ্যমে রূপান্তরিত হয় বিটিভি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটির ক্ষুদ্র পরিসর থেকে রামপুরায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

‘বদলে যাবে বদলে দিবে’ স্লোগান সামনে রেখে বিটিভিকে আরো গণমুখী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন, অনুষ্ঠানের প্রচারণা বৃদ্ধিসহ নানা পরিকল্পনা এর আওতায় থাকবে। আজ ২৪ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভির ৫৫তম বর্ষপূর্তি আগামীকাল। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন নামে চালু হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এরপর বাংলাদেশের জন্মের পরের বছর সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলার ব্রত নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। ১৯৮০ সালে দর্শকদের রঙিন পর্দা উপহার দেয়ার মাধ্যমে নতুন যুগে পা রাখে বিটিভি।

এখন বিটিভি ওয়ার্ল্ড’র মাধ্যমে দেশের বাইরেও নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে। দর্শকের কাছে পৌঁছতে যুগোপযোগী পরিবর্তনের অঙ্গীকার আর প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে এবার ৫৬ বছরে পা রাখলো গণমাধ্যমটি। এই পথচলায় সবার সহযোগিতা চাই আমরা।’

বিটিভির জন্মদিন উপলক্ষে ২৪ ডিসেম্বর বিটিভির রামপুরার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিভির অনুষ্ঠান ও পরিচালনা পরিচালক জগদীশ এষ, উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) ড. তাসমিনা আহমেদ, উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ খাস্তগীর, ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নাসির মাহমুদ, সহ-দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রযোজকরা।

সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ আরও বলেন, ‘গণমানুষের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ও বিনোদনের যে সাধারণ চাহিদা তা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে থাকি বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে। টেলিভিশনকে তো পিছিয়ে থাকলে চলে না; তাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে অন্যান্য টেলিভিশনের মতো আমরাও যুগোপযোগী হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী বছর ফুল এইচডিতে বিটিভিকে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।

বিটিভিকে সব সময় প্রান্তিক মানুষদেরকে সুযোগ করে দিতে হয়। হয়তো সেই কারণে কাঁদা-মাটির মানুষ এবং অনুষ্ঠান আমাদের এখানে বেশি। আর জনরুচির ইতিবাচক পরিবর্তনকে অনুপ্রেরণা যোগানো হলো বাংলাদেশ টেলিভিশনের দায়িত্ব। এ জন্য আমরা ডিজিটাল কনটেন্ট ও প্রোগ্রাম তৈরি করছি, যেগুলো এই মুজিববর্ষে শিগগিরই প্রচারে যাবে।

বিটিভি নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। বিটিভির অনুষ্ঠান ক্রমশই আধুনিক হচ্ছে এবং বিষয়-বৈচিত্র সাজানো জনবান্ধব অনুষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমরা দর্শককে আরো বেশি বিটিভির সঙ্গে সংযুক্ত করতে খবর ও বিনোদনের পাশাপাশি দর্শকবান্ধব অনুষ্ঠানের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা ভালো চিত্রনাট্য লেখেন এমন লেখকদের আহ্বান জানাচ্ছি তাদের লেখা নাটক নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য।’

‘আমাদের এই টেলিভিশন জনগণের টেলিভিশন, আমাদের এই টেলিভিশন রাষ্ট্রের টেলিভিশন, এই টেলিভিশন মানুষের টেলিভিশন। সুতরাং এই টেলিভিশনে প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে সবাইকে মতবাদ দেয়া ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিজয়ের মাসে আমরা সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছাও জানাচ্ছি’- যোগ করেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় করোনাকালেও গণমাধ্যম হিসেবে বিটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। ২০২০ সালে বিটিভি কিছু নতুন অনুষ্ঠান চালু করেছে। যেমন করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য, ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘এই সময়’ সোম থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রচারিত হয়। প্রতিদিনের খবর ও খবরের বিশ্লেষণ নিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠান ‘খবর প্রতিদিন’ প্রতিদিন রাত ১২টায় প্রচারিত হচ্ছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য জিজ্ঞাসা, বিটিভির সংলাপ, সরাসরি গানের অনুষ্ঠান নিশি গুনগুন, সুপ্রভাত বাংলাদেশ দর্শকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। চালু হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকের রাজনৈতিক টক শো ‘বাংলাদেশ ফাইলস’, ধারাবাহিক তথ্যচিত্র ‘নাটের গুরু’ ও সকালের সরাসরি অনুষ্ঠান ‘শুভ সকাল বাংলাদেশ’। নারীরা কথা বলছেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ‘ফিফটি পার্সেন্ট’ অনুষ্ঠানে। শুরু হয়েছে জেলা ভিত্তিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে।’

এদিক চ্যানেলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে করোনাভাইরাসের এই কঠিন সময়ে কোনো বৃহৎ আয়োজন না থাকলেও বিটিভির কর্মকর্তা- কর্মচারীরা নিজেরাই স্বল্প পরিসরে উদযাপন করবেন দিনটি। এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাইভ অনুষ্ঠান প্রচার করবে চ্যানলটি। দুটি স্টুডিও থেকে এই লাইভ অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে। এতে শুভেছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আয়োজনও রয়েছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়