ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাশরুম চাষে মাসে লাখ টাকা আয় করছে যুবক

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষে সফল হয়েছেন এক যুবক। বর্তমানে এ যুবকের খামারে রয়েছে ১ হাজার খড়ের স্পন প্যাকেট। আর এ প্যাকেট থেকে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মাশরুম বিক্রি করে মাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। তার এ সাফল্যে সাড়া ফেলেছে গোটা এলাকাজুড়ে। 

করোনাকালীন সময়ে বেকারত্ব ঘোচাতে মাশরুম চাষ শুরু করলেও বর্তমান উৎপাদনে মেটাতে পারছেন না ক্রেতাদের চাহিদা।

পটুয়াখালী পৌর শহরের দক্ষিণ কালিকাপুর এলাকার সুশান্ত মজুমদারের ছেলে সৌমিত্র মজুমদার শুভ। ২০১৭ সালে এলএলবি পাশ করে ঢাকায় এক আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সালের করোনাকালীন সময়ে তেমন একটা আয় না থাকায় এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। বেশ কিছুদিন বেকার থাকার পর জার্মানি খালাতো বোনের পরামর্শে আগ্রহী হন মাশরুম চাষে। পরে সাভারের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টারে দুই মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। 

চলতি বছর এপ্রিল মাসে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির নবাবগঞ্জ গ্রামে খালার বাড়িতে ৫০ টি স্পন প্যাকেট দিয়ে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় ওই বাড়িতেই ২০ শতাংশ জমিতে দুটি সেডের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন মাশরুম খামার। 

বর্তমানে খামার থেকে প্রতিনিয়ত ১৫ কেজি করে মাশরুম পাচ্ছেন তিনি। তাতেও মেটাতে পারছেন না ক্রেতাদের চাহিদা। তবে সরকারি সহায়তা ও স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে এ খামার বৃদ্ধির মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।

মাশরুম চাষি সৌমিত্র মজুমদার শুভ জানান, খড়, কাঠের গুড়া, গমের ভূষি, তুষ ও চুন দিয়ে আমরা নিজেরাই মাশুরুমের বীজ তৈরি করি। পরে বীজের সঙ্গে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টার থেকে আনা টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা ও দিনে তিনবার পানি স্প্রে করার ২০ দিনের মাথায় শুরু হয় ফলন। এ কাজে তেমন একটা পরিশ্রম নেই। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ কেজির মতো অর্ডার আসে। তবে বেশির ভাগ অর্ডার অনলাইনেই আসে। 

খামার আরো বড় করতে পারলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব বলে আশবাদী অদম্য এ যুবক। পরামর্শ দেয়া খালাতো বোন রত্না বিশ্বাস জানান, বিদেশে নিত্য দিন সবাই মাশরুম খেয়ে থাকেন। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তবে এ দেশের মানুষ মাশরুমের গুণ সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। শুভ যখন বেকার দিন কাটাচ্ছিল তখন তাকে মাশরুম চাষের পরামর্শ দিয়েছিলাম। দেশে এসে দেখলাম ও ভালই খামার করেছে। এবং অনেক টাকা আয় করছে। তাকে নিয়ে গর্ববোধ হচ্ছে। 

শুভর খালাতো ভাই জীবন বিশ্বাস জানান, মাশরুম চাষে আগ্রহী হওয়ার পরই শুভকে আমাদের পরিত্যক্ত জমিতে খামার গড়ে তুলতে বলি। শুভ ২০ শতাংশ জমির ওপর দুইটি সেড তৈরি করে মাশরুম চাষ করছে। ওর সফলতা এসেছে। 

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, মাশরুম চাষ একটি লাভজনক পেশা। এর পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। মাশরুম চাষি শুভকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া এই এলাকার কোনো যুবক মাশরুম চাষে আগ্রহী হলে তাকে সব ধরনের সহযোহিতা করা হবে। 

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়