ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

নতুন প্রযুক্তির ব্যাটারি "ন্যানো ডায়মন্ড ব্যাটারি"

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ১০ এপ্রিল ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

হীরার কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে চকচকে মহামূল্যবান পাথরের ছবি। নারীদের কাছে হীরার আবেদন কতটুকু, তা না বললেও চলে।কিন্তু এই হীরা এখন আর মূল্যবান পাথর বা অলংকারের মধ্যেই তার মর্যাদা সীমাবদ্ধ রাখছে না। হীরা এখন নানা যন্ত্রপাতির শক্তিও সরবরাহ করবে। তবে যেনতেন শক্তি নয়, হীরা আর পরমাণু বর্জ্য দিয়ে তৈরি হবে একটি ব্যাটারি। যা দিয়ে যেকোনো যন্ত্রের শক্তি জোগান দেওয়া যাবে ২৮ হাজার বছর পর্যন্ত।

সত্যি শুনেছেন,২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল ক্যাবোট ইনস্টিটিউটের প্রস্তাবিত পারমাণবিক ব্যাটারির ধারণাকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ন্যানো ডায়মন্ড ব্যাটারি (এনবিডি) এমনটা দাবি করেছে। তাদের মতে, এটি হবে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন আল্ফা, বেটা এবং নিউট্রন ভেলোসিটি ব্যাটারি।

এনবিডি বলছে,প্রথমে পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা করতে ব্যবহৃত গ্রাফাইট সংগ্রহ করা হয় এটি তৈরিতে।এরপর অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় এই গ্রাফাইট অতি সূক্ষ্ম হীরার পাতলা আবরণের ভেতর রাখা হয়। এই আবরণ একই সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর এবং তাপ অপসারণের কাজ করে।

হীরা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে শক্ত ধাতু এবং অধিক শক্তি পরিবাহী। এই সূত্রকে কাজে লাগিয়ে তেজস্ক্রিয় গ্রাফাইট থেকে সহজেই তাপ আহরণ করা যায়। এই তাপ পরবর্তী সময়ে বিশেষ আধারে বিদ্যুৎ শক্তি হিসেবে সংরক্ষণ করা সম্ভব। অপর দিকে হীরার আবরণ তেজস্ক্রিয়তা নির্গত হওয়াও প্রতিরোধ করে। 

হীরার তৈরি ব্যাটারির দুটি সংস্করণ থাকবে। একটি হচ্ছে ‘চিরকাল’ সংস্করণ, যেটা মহাবিশ্বে বিচরণ করা বাহনের শক্তি জোগাবে। যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত উপগ্রহতেও এই বিশেষ ব্যাটারি কাজে লাগানো হবে। অন্য সংস্করণটি জনসাধারণের ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি যেমন বিদ্যুৎচালিত গাড়ি, ফোন ও অন্যান্য ছোট যন্ত্রের জন্য প্রস্তুতের পরিকল্পনা আছে।

স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, টিভি রিমোটসহ যেকোনো যন্ত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী এই ব্যাটারির আকার দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি হীরার ব্যাটারি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু কোভিড মহামারির জন্য এই কার্যক্রম পিছিয়ে যায়।

তবে আপাতত এনবিডি আগামী দুই বছরের মধ্যে হীরা দিয়ে কম শক্তিসম্পন্ন ব্যাটারি প্রস্তুত করবে এবং পরবর্তী পাঁচ বছরে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ব্যাটারি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পারমাণবিক নিউক্লিয়াসযুক্ত কার্বনের একটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অর্ধায়ু হয় হাজার হাজার বছর। আর এই লম্বা সময় ধরেই হীরক ব্যাটারি তার শক্তি তেজস্ক্রিয় গ্রাফাইট থেকে আহরণ করবে। সুতরাং হীরার তৈরি এই ব্যাটারির চার্জ আজকালের মধ্যে শেষ হচ্ছে না সেটা বলা বাহুল্য। এখন দেখার বিষয় তেজস্ক্রিয়তাপূর্ণ এই ব্যাটারি ব্যবহারে জনসাধারণ কতটুকু উৎসাহ পায়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়