তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
ধর্ম ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
নামাজ বেহেশতের চাবি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার অনেক ফজলত রয়েছে।
ইমাম শাফেয়ী (রহ.) তাহাজ্জুদের নামাজ সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাহাজ্জুদ নামাজের দোয়ার তুলনা হলো এমন যে, একটি তীর সফলভাবে তার লক্ষ্যভেদ করেছে।’
রাতের কিছু অংশে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনার মাধ্যমে বান্দাহ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করে। এর মাধ্যমে বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, “ফরজ নামাজের পর রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ নামাজ) সর্বোত্তম ইবাদত।”(সহীহ মুসলিম)
চলুন এবার তাহাজ্জুদ নামাজের পাঁচটি আশ্চর্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
>> কোরআন মাজীদে আল্লাহ মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করতো (সূরা যারিয়াত, আয়াত: ১৮)
সাধারণ মুসলিম ও আল্লাহর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণকারী আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী মুসলিমের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য। তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
>> রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ বান্দাদের প্রতি তাদের কর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানান। আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, “প্রতি রাতের শেষ এক-তৃতীয়াংশে আল্লাহ জমিনের কাছাকাছি আসমানে নেমে আসেন এবং তার বান্দাদের আহবান জানান, ‘কে আছো আমার কাছে প্রার্থনা করবে যাতে আমি তার প্রার্থনার জবাব দিতে পারি? কে আছো আমার কাছে কিছু চাওয়ার যাতে আমি তাকে তার প্রার্থিত বস্তু প্রদান করতে পারি? কে আছো আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার যাতে আমি তাকে ক্ষমা করতে পারি?” (বুখারী ও মুসলিম)
আল্লাহ যেখানে নিজে বান্দাদের আহবান জানান তার কাছে প্রার্থনার ও ক্ষমার, সেখানে তার বান্দার প্রার্থনা গ্রহণ ও বান্দাকে ক্ষমা করার সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত।
>> তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে সক্ষম হতে পারেন।
>> তাহাজ্জুদের নামাজ বান্দাকে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম। এছাড়া তাকে তার শত্রুদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায়ও তাহাজ্জুদের গুরুত্ব রয়েছে।
>> তাহাজ্জুদ রাসূল (সা.) এর সুন্নতের অনুসরণ। তাহাজ্জুদ আদায়ের মাধ্যমে মানবাত্মার আধ্যাত্মিকতার উন্নয়ন ঘটে এবং মানুষ তার নফসের তাড়না থেকে হিফাজত থাকে। তাহাজ্জুদ বান্দার কবর জীবনে কবরকে আলোকিত করা এবং কবরে আরামদায়ক শয্যার কারণ হবে।
এছাড়া তাহাজ্জুদের মাধ্যমে আপনার ঈমানের মজবুতি, শারীরিক সুস্থতা রক্ষা, জীবিকার উন্নয়ন, কবরে মুনকার-নাকিরের প্রশ্নের উত্তর প্রদান সহজকরণ, কবরের একাকীত্বকে দূর করা, কিয়ামতের দিন রক্ষাকবজ হওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করবে।
তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত প্রতিদিন ফজরের কিছুক্ষণ আগে ঘুম থেকে উঠে কম করে হলেও দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা।
- পিরিয়ডকালে রোজার বিধান
- ইসলাম ছেলেদের লম্বা চুল রাখা বিষয়ে কি বলে?
- প্রথম রোকন ইমানের পরই নামাজের স্থান
- জুমার দিনে যে দোয়া কবুল হয়
- কোরআন শিক্ষা ও তেলাওয়াতের ফজিলত
- ‘নফসের খাহেশাত থেকে নিজকে বাচানোর উপায়’
- যেভাবে বিশ্বনবী সাহায্য লাভের জন্য দোয়া করতে বলেছেন
- দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকার আমল
- লাইলাতুল কদর তালাশ করুন...
যে রাতের আমল ৮৩ বছর চার মাসের সমান - মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে গোপন পাপ