ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২০ জানুয়ারি ২০২২  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার আবার নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে, কাজেই সকলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলবেন। নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২১-২০২২ এর গ্রাজুয়েশন সেরেমনিতে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএসসিএসসি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. জুবায়ের সালেহীন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। এবারে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৮টি দেশের ৪৭ জন বিদেশি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ পুলিশের ৩ জন কর্মকর্তাসহ মোট ২৫১ জন পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেছেন। দডিএসসিএসসি’ এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর মোট ১২৮টি কোর্স পরিচালনা করেছে এবং ৫ হাজার ৬৮৬ জনকে ডিগ্রি প্রদান করেছে। ৪৩টি দেশের ১ হাজার ২৫৫ জন অফিসার এখান থেকে ডিগ্রি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করছি। ২০১৬ সালে ‘বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষানীতিকে যুগোপযোগী করে ‘জাতীয় প্রতিরক্ষানীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছি। অ্যারোস্পেস ও এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি এবং ’৯৬ সালে যখন সরকারে আসি তখনই ‘বিপসট’ প্রতিষ্ঠা করে দেই। পাশাপাশি সিএমএইচগুলোকে অত্যাধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করি এবং আরো অনেকগুলো মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করে দেই।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের এই নীতিমালার কারণে সমগ্র বিশ্বে আজ একটা সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছি। বাংলাদেশ সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে আমাদের দেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছে। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সবসময়ই বিপন্ন মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করব না কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে আমরা চুপ করে থাকব না। সেটা নিশ্চয়ই আমরা প্রতিরোধ করব বা প্রতিবাদ করব- সেভাবেই আমরা আমাদের সশস্ত্রবাহিনীকে গড়ে তুলেছি।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো জাতীয় প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত থাকেন এবং সহযোগিতা করে থাকেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসকালে তাদের সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার প্রসঙ্গও টেনে আনেন।

তিনি বলেন, তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। আমরা আবারো সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের স্থানটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।

সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশ গড়ে তুলে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে উন্নীত করে যান এবং সেখান থেকে সরকারের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। এই সময়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদণ্ডে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে একটি। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশের নীচে নামিয়ে এনেছি এবং মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক করে যাচ্ছি, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের আলোকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নেয়ার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি সত্যিই জাতির পিতার স্বপ্ন আজকে পূরণ হয়েছে। তিনি বলেছিলেন-একদিন বিদেশি বন্ধুরা আমাদের একোডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে আসবে। 

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে ‘সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ কোর্স ২০২১-২০২২’ সফলভাবে পরিচালনা ও সম্পন্ন করায় প্রধানমন্ত্রী ডিএসসিএসসি কমান্ড্যান্ট এবং সকল অনুষদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

তিনি সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে আরো বলেন, সবসময় বিশ্বে মাথা উঁচু করে সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে চলার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, আমাদের যা সম্পদ আছে তাই দিয়ে আমরা নিজেদেরকে বিশ্বে মর্যাদাশীল করে গড়ে তুলেছি এবং আমরা আরো গড়ে তুলব, সামনে এগিয়ে যাব।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়