ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল: মনিরুল ইসলাম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ১৯ জানুয়ারি ২০২১  

মনিরুল ইসলাম

মনিরুল ইসলাম

জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল বলে মন্তব্য করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে আল-কায়েদা, আইএসসহ কোনো জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব নাই। এদেশে কোনো জঙ্গি সংগঠনের শাখা নেই। দেশে বড় ধরনের কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও নেই। জঙ্গিবাদের ঝুঁকির দিক থেকে ঢাকা ইউরোপ-আমেরিকার অনেক শহরের চেয়েও নিরাপদ ঢাকা।রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘সহিংসতা ও চরমপন্থা প্রতিরোধে ইসলামিক বিজ্ঞজনদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) তিনি এসব কথা বলেন।মনিরুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র বলে আইএস আছে, আল-কায়েদা আছে, জঙ্গি আছে। বড় ধরনের হামলা হতে পারে। কিন্তু এরকম ভয়ের কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ জঙ্গি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এসবের কোনো অস্তিত্বই বাংলাদেশে নেই। আর যদি থাকে তাহলে প্রমাণ দিন। তা যাচাই-বাছাই করে আমরা ব্যবস্থা নেব।কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান আরও বলেন, গ্লোবাল ইনডেক্স রিপোর্টে দেখা যায়, তাতে বাংলাদেশের অবস্থা ইউরোপ-আমেরিকার থেকে বসবাস অনেক আগানো। অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে ঝুঁকি অনেক কম। দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে ভুটানের পরে বাংলাদেশের অবস্থান। আমি মনে করি বাংলাদেশ ইউরোপ আমেরিকা থেকে জঙ্গিমুক্ত। অধিক নিরাপদ। বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে বিশ্বের রোল রোল মডেল।মনিরুল ইসলাম বলেন, সারাবিশ্ব জঙ্গিবাদের সমস্যায় ভুগছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে, ধর্মকে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক লোক, সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে, ধর্মের ক্ষতি হচ্ছে। সারা বিশ্বের মুসলমানদের ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানদের নামের কারণে ভিসা পেতে সমস্যা হয়। আমি মনে করি, উস্কানি দিয়ে কিছু পথভ্রষ্ট মুসলমান, একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর সবাই মিলে ইসলামের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।ফ্রান্সের ঘটনা উল্লেখ করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের কত মানুষ ফ্রান্সে আছে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে কিংবা বিভিন্ন সময়ে গিয়ে ওখানে থেকে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জঙ্গিবাদের ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে, ফলে সামরিক শক্তিসমৃদ্ধ দেশগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, যারা জঙ্গি ও উগ্রবাদী তারা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না। আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন ধর্ম শিক্ষায় শিক্ষিত ছিল না। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার।আলেমদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জঙ্গি ও উগ্রবাদী দমনে আপনাদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ রয়েছে আপনারা সঠিক দায়িত্ব পালন করলে জঙ্গি দূর করা সম্ভব।কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা বলেন, হলি আর্টিজানের পর জঙ্গিরা আরও হামলার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। একটা মহল তাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছে, অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে, কিন্তু সরকারের পদক্ষেপে তা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ হয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। বৈশ্বিক সূচকে জঙ্গিবাদের ঝুঁকির দিক থেকে ঢাকা এখন ইউরোপ-আমেরিকার অনেক শহরের চেয়ে নিরাপদ।এ সময় তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজান দেশকে যে ইমেজ সংকটে ফেলেছিল, এমন যাতে আর না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে আলেম-ওলামাদের। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে তরুণদের বিপথগামী করা হচ্ছে, তা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করতে আলেমদেরই মুখ্য দায়িত্ব।মনিরুল ইসলাম বলেন, যে তরুণের মধ্যে ইসলামি স্পিরিট আছে, সে কখনও জঙ্গিবাদে জড়াতে পারে না। যারা জড়ায়, তাদের মধ্যে ধর্ম সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞান। জঙ্গিবাদে যারা জড়ায় তারা সব মসজিদে যায় না, নির্দিষ্ট কিছু মসজিদে গিয়ে পড়ে। কারণ তারা বলে সরকারি অনুদানের মসজিদে নাকি নামাজ সহি হয় না।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান আলেমদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেকোনো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইসলামে না-জায়েজ। এ বিষয়টা সর্বস্তরে বুঝানোর দায়িত্ব আলেম সমাজের। আপনারা প্রত্যেকটা মসজিদে একটা নির্দিষ্ট সময় এ বিষয়ে বয়ান দিবেন, আলোচনা করবেন।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, ইসলামি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ আনিস মাহমুদসহ আলেম ওলামারা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়