ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

চট্টগ্রামে রফতানি আয়ের শীর্ষে আটটি পণ্য

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ৪ অক্টোবর ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হওয়া ১১টি পণ্যের মধ্যে শীর্ষ ভাগ আয় আসে আটটি পণ্য থেকে। সেগুলো হলো- ওভেন পোশাক, নিটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ, কৃষিজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা এবং প্রকৌশল দ্রব্যাদির মতো পণ্য।

এক্ষেত্রে দেশভিত্তিক রফতানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, কানাডা, বেলজিয়াম, নেদাল্যান্ডস, জাপান, চীন, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, রাশিয়া ও পোল্যান্ড।

শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় ওভেন পোশাক। জার্মানিতেও ওভেন পোশাকের পাশাপাশি রফতানি হয় বাই সাইকেল ও হোম টেক্সটাইল। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতে পাট, পাটজাত পণ্য, নীটওয়্যার ও প্লাস্টিক পণ্য, যুক্তরাজ্যে ওভেন পোশাক ও নীটওয়্যার জাতীয় পণ্য, ফ্রান্সে ফুটওয়্যার ও হোম টেক্সটাইল পণ্য, স্পেনে পাদুকা, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ইতালিতে নীটওয়্যার ও হোম টেক্সটাইল পণ্য, কানাডায় নীটওয়্যার ও ওভেন পোশাক, নেদারল্যান্ডসে ক্রাস্টেসিয়ানস, নীটওয়্যার ও ওভেন পোশাক এবং জাপানে পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য বেশি রফতানি হয়ে থাকে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ১১ পণ্য থেকে রফতানি আয় আসে ৫৭ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওভেন পোশাক, নীটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ, কৃষিজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা এবং প্রকৌশল দ্রব্যাদি থেকেই আসে ৫৪ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মোট রফতানি আয়ের সাড়ে ৯৪ ভাগই আসে এ আট পণ্য থেকে। 

এর মধ্যে নীট পোশাক থেকে ২৭ হাজার ৩৬৭ কোটি ২০ লাখ, ওভেন পোশাক থেকে ২০ হাজার ২৫ কোটি ৬০ লাখ, হোম টেক্সটাইল থেকে এক হাজার ৪৭০ কোটি, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা থেকে এক হাজার ৪৬১ কোটি, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ থেকে ৭৩০ কোটি, কৃষিজাত পণ্য থেকে এক হাজার ৭৩৮ কোটি, কাঁচা পাট ও পাটজাত দ্রব্য থেকে এক হাজার ৬৬ কোটি এবং প্রকৌশল দ্রব্যাদি থেকে ৫৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা আসে।

এর বাইরে ফার্মসিউটিক্যালস থেকে ৩০২ কোটি, প্লাস্টিক ও মেলামাইন পণ্য থেকে ১৬৮ কোটি এবং বাইসাইকেল থেকে ২০১ কোটি টাকা আসে।

২০২০-২১ অর্থবছরেও বিশ্বজুড়ে ব্যাপক চাহিদা ছিল এ আট পণ্যের। ওই বছরের আগস্ট মাসে নীট পোশাক থেকে ২৬ হাজার ১৫৭ কোটি ৬০ লাখ, ওভেন পোশাক থেকে ২১ হাজার ৮২৩ কোটি, হোম টেক্সটাইল থেকে এক হাজার ৪১১ কোটি ২০ লাখ, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা থেকে এক হাজার ২৯৩ কোটি, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ থেকে ৬২১ কোটি ৬০ লাখ, কৃষিজাত পণ্য থেকে এক হাজার ৪৯৫ কোটি, কাঁচা পাট ও পাটজাত দ্রব্য থেকে এক হাজার ৬৩৮ কোটি এবং প্রকৌশল দ্রব্য থেকে ৬৮০ কোটি টাকা রফতানি আয় আসে।

এদিকে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর নীট পোশাক, হোম টেক্সটাইল, শাক-সবজি, টেরি টাওয়েলস, ক্যামিকেল পণ্য, ওষুধ, বাইসাইকেল, কপার ওয়্যার, প্লাস্টিক সামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জুতা, সিরামিক পণ্য, রাবার, কাঁচা পাট, ফার্নিচার জাতীয় পণ্যের রফতানি বেড়েছে বলে বলছেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা। তবে কমেছে চা, গুঁড়া মশলা, শুকনো খাবার, তামাক, ইলেকট্রিক জাতীয় পণ্যের রফতানি। 

বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে চরম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল পোশাকখাত। তবে বর্তমানে কিছু বিদেশি কার্যাদেশ আসছে। ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। 

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে গ্যাস, বিদ্যুতের সংকটসহ অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, যা পোশাকখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়াও কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের ভ্যাট আদায়ের কার্যক্রম সহজ করা এবং বন্দরে এলসিএল পণ্য রাখতে শেড বাড়ানো প্রয়োজন। সব সমস্যার সমাধান করা গেলে রফতানি আয় আরো বাড়ার সুযোগ তৈরি হবে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, বর্তমানে রফতানির হার আগের তুলনায় বেড়েছে। চট্টগ্রাম থেকে পোশাক রফতানি হয় বেশি। এর পাশাপাশি শাক-সবজি, ওষুধ, বাই সাইকেল, প্লাস্টিক সামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, জুতা, সিরামিক পণ্য, রাবার ও ফার্নিচার জাতীয় পণ্যের রফতানি বেড়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়