ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গাল বাড়িয়ে চড় খেয়ে জিততে পারলেই পাবেন টাকা!

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কথায় বলে, গাল বাড়িয়ে কোনোদিনও চড় খেতে নেই। তবে জানেন কি, এই গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়ার জন্যই অনেকে মুখিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, রীতিমতো রেডি হয়ে থাকেন সপাটে থাপ্পড় খাওয়ার জন্য। বিশ্বে নানা ধরনের খেলা রয়েছে, কিন্তু থাপ্পড় মারার খেলা যেন একটু অদ্ভুত। তাই না? যিনি মঞ্চে থাপ্পড় খেয়ে টিকে থাকতে পারবেন, তিনি পেয়ে যাবেন অনেক টাকা। হ্যাঁ, এমনই একটি খেলা রয়েছে রাশিয়ায়। 

রাশিয়ার অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খেলা হলো স্ল্যাপ বক্সিং বা স্ল্যাপিং গেম। মানে থাপ্পড় মারামারি খেলা। এই খেলাটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ২০১৯ সালে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খেলার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। তারপর থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জনগণ এই খেলার ব্যাপারে জানতে পারে। 

রাশিয়ার অনেকেই আছেন, যারা এই খেলায় পুরস্কার জেতার জন্য উদগ্রীব থাকেন। এই খেলায় জিতলে প্রায় ৫০,০০০ রুবেল থেকে ৩০,০০০ রুবেল পর্যন্ত ( ৮০০ ডলার থেকে ৪৭৫ ডলার পর্যন্ত) পাওয়া যায়। 

এক খেলায় দুজন প্রতিযোগী মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকবেন। থাপ্পড় খেতে হবে এবং খালি হাতে থাপ্পড় দিতে হবে। মাথায় থাকবে না কোনো সুরক্ষা বা হেলমেট জাতীয় কিছু। এই খেলায় প্রত্যেক প্রতিযোগী থাপ্পড় মারার জন্য পাঁচবার করে সুযোগ পান। দুই প্রতিযোগীর মধ্যে পাঁচ-পাঁচ দশবার থাপ্পড় মারার প্রচেষ্টা শেষ হলে বিচারকরা ঠিক করেন কে ভালো ফল করেছেন। তারপর বিজয়ী চলে যান পরবর্তী রাউন্ডে।

তবে এখানেই শেষ নয়, থাপ্পড় মারার পর নিজেদের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতিযোগি একটা শক্ত স্ট্যান্ড ধরে রাখেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের পায়ের উপরে ভরসা করতে হয়। থাপ্পড় খেয়ে পড়ে গেলেই অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।

এছাড়াও যিনি থাপ্পড় মারবেন তাকে প্রতিপক্ষকে শুধুমাত্র হাতের তালুর উপরের অংশ দিয়েই মারতে হবে। একেবারেই কানে মারা চলবে না। তবে অনেক জায়গায় কানের নিচে অর্থাৎ গলার অংশে মারতে দেখা গেছে। যদি কোনো প্রতিযোগী থাপ্পড় এড়িয়ে যান তাহলে একটি ফাউল। পরপর দুটি ফাউল করলেই সেই প্রতিযোগী ম্যাচে হেরে যাবেন। বেশিরভাগ প্রতিযোগী প্রথম থাপ্পড়েই ছিটকে যান।

এই খেলাটি সাধারণত বিনোদনের জন্য, তবে এই খেলাটি জীবনের জন্য যথেষ্ট ঝুঁকির। এমনকি প্রতি পদক্ষেপে আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেকে আছেন থাপ্পড় খেয়ে পড়ে গিয়ে তৎক্ষণাৎ অজ্ঞান হয়ে যান। অনেকে আবার মঞ্চে দাঁড়িয়েই খুশি হয়ে ওঠেন যখন থাপ্পড় খেয়েও নিজেকে শক্ত ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীর পরিবারের সদস্যরাও পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান দেখতে ভয় পান।

সাধারণত ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই প্রথমেই প্রতিযোগীদের নিয়ম-কানুন ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কারণ প্রতিপক্ষ ইচ্ছে করে ভুল জায়গায় থাপ্পড় মারলে মানুষ মারাও যেতে পারে। তাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককেই সই করতে হয় একটি চুক্তি পত্রে। খেলার মঞ্চের আশেপাশেই ব্যবস্থা করা থাকে চিকিৎসক থেকে শুরু করে নানান ব্যান্ডেজ, তুলার প্যাড, অ্যান্টিসেপটিক, যা যা প্রয়োজন লাগে একজন জখম ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য। 

অনেকে খেলায় নামার আগে নিজেদের হাতের আঙুল কনুই এবং গাল ভালো ভাবে গরম করে নেন। এই থাপ্পড় মারার খেলা শুধুমাত্র পুরুষরাই খেলেন না। এই খেলায় নারীরাও অংশগ্রহণ করেন। দিব্যি মঞ্চের ওপর একদিকে হালকা চেহারার এক নারী অপরদিকে বেশ ষন্ডামার্কা চেহারার এক নারীর মধ্যে এই লড়াই দেখা গেছে। এখানে মূলত হাতের তালুর জোরটাই আসল। তবে এখানে খেলায় অংশগ্রহণ করেন সবাই মজা করে। কারোর উপর রাগ মেটানোর জন্য নয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়