ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

কোকোর সিমেন্স দুর্নীতি: বিএনপির জঘন্য অধ্যায়

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২০ জানুয়ারি ২০২১  

বেগম খালেদা জিয়া ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো

বেগম খালেদা জিয়া ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো

২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত জোট সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতি ও অপকর্মের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৪ দলীয় জোট সরকারের অদক্ষ শাসনে দেশের প্রতিটি সেক্টর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। দুর্নীতি দমনের বদলে উল্টো রাষ্ট্রীয়ভাবে এই অপকর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার দুই কুপুত্র ব্যাপকহারে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে অন্যতম কেলেঙ্কারি হলো আরাফাত রহমান কোকোর সিমেন্স দুর্নীতি।

তথ্যসূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে সিমেন্স। বিভিন্ন অভিযোগ ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট খালেদাপুত্র কোকোর কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মামলা করে। এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জমা ছিল।

কোকো সিমেন্স এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাছ থেকে তার অ্যাকাউন্টে ঘুষ হিসেবে নিয়েছিলেন ওই টাকা। মার্কিন বিচার বিভাগ কোকোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার মামলা করেছিল কারণ তার সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কিছু টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল। কোকোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই তার ঘুষের টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করে বিদেশ থেকে ঘুষ ও জোরপূর্বক টাকা আদায় করলে তা যুক্তরাষ্ট্রের মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় পড়ে।

কোকোর মামলার বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তার অ্যাকাউন্টের লেনদেন হয়েছে বিদেশে বসে এবং ঘুষ ও জবরদস্তিমূলকভাবেই তিনি ওই অর্থ নিয়েছিলেন। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে কোকোর ওই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল তাই বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কোকোর মানি সিমেন্স ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে কাজ করে।

কোকো জাসজ (ZASZ) নামে সিঙ্গাপুরে একটি কোম্পানির নামে তার ঘুষের অর্থ রেখেছিল যা তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত। (জাফরিয়া কোকোর বড় মেয়ে, আরাফাত রহমান কোকো নিজে, কোকোর স্ত্রী শর্মিলা এবং জাহিয়া কোকোর ছোট মেয়ে এই চার জনের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে জাসজ নামের কোম্পানিটি গঠিত হয়েছিল।) আরাফাত রহমান কোকো ঘুষের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণে অর্থ জমা করেছিল, এমন প্রমাণ পাওয়ার পর সেদেশের সরকার ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকারকে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিয়েছিল।

অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন, বিদেশে পাচার করার মামলায় ২০১১ সালে কোকো’কে ৬ বছরের জেলের সাজা দিয়েছিলেন আদালত। সিঙ্গাপুরে ফেয়ারহিল নামে একটি কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় কোকোর আরো ৫.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়