ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

একটি প্রত্যাশার জন্ম: লিটন দাস

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৪ মে ২০২২  

লিটন দাস

লিটন দাস

বিশ্ব ক্রিকেটে যখন একজন বিশ্বসেরার অভাবে বুক ফুলিয়ে, উঁচু শিরে কথা বলা দায়; ক্রিকেট আকাশে হাজারো তারার ভিড়ে আমাদের নেই কেউ; শচিন, লারা, পন্টিং, আকরাম, আনোয়ারদের সাথে নেই কেউ মহারথীর পাতায়। তখন সাকিব আল হাসান পা রেখেছিলেন ক্রিকেট পাড়ায়। অতঃপর...

ওই গল্প পুরনো হয়েছে। এখন আমরা বলতে পারি আমাদের একজন সাকিব আল হাসান আছে। কিন্তু চাহিদার কি শেষ আছে? একজন কোহলিকেও আমাদের লাগে যে! কোথায় তাকে পাই, খুঁজতে গিয়ে এক তরুণের দেখা পাওয়া। ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাট হাতে যিনি যেন মুগ্ধতার ফেরিওয়ালা। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক ভিন্নতা। তবুও তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখা।

স্বপ্ন দেখা যতটা সহজ, সত্যি করাটা যেন তার থেকে অনেক বেশিই কঠিন। তার বেলাতেও তাই হলো, ব্যর্থতা জেঁকে বসল সীমাহীন। ঘুরে-ফিরে সুযোগ এলেও, প্রত্যাশার সাগরে প্রায়ই ভাটার দেখা। তবে কখনো কখনো জোয়ারও উঠতো সাগরে। নোনা পানির সেই জোয়ার যেন কাঁটা গায়ে নুনের ছিঁটা। বেড়ে যেত আফসোসটা, ইশ! যদি থাকতো তার ধারাবাহিকতা।

তবে তার প্রতি কেন যেন আলাদা একটা বিশ্বাস আর ভালোলাগা ছিল সবার। তিনি যে সোনার ডিম পাড়া হাঁস, তিনি আমাদের লিটন দাস। কে না জানে তার ক্লাস? ইয়ান বিশপ তো তার ব্যাটিংকে ‘মোনালিসা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। যিনি মোনালিসা আঁকেন ব্যাট হাতে ক্রিকেট মাঠে, বাইশ গজের সবুজ ক্যানভাসে।

বাইশ গজের ওই ক্যানভাসে যখন ছবি আঁকেন তিনি, সদ্য তারুণ্যে পা রাখা চঞ্চল ছোকরা থেকে চোখে ঝাপসা দেখা বুড়ো পর্যন্ত অপার বিস্ময়ে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন তীব্র আকর্ষণে। যেন উইলোর তুলি হাতে ছয় আউন্সের চর্মগোলকটার রঙে রংধনুর ন্যায় রাঙিয়ে তোলেন মাঠ নামক ওই সবুজ ক্যানভাসটা আপনমনে। সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে উইকেটের চারিপাশে যে শটগুলো খেলেন তিনি, তার উপমাতে বাইশ গজের দ্য ভিঞ্চি আখ্যাতে দ্বিতীয়বার ভাবার প্রয়োজন আছে কি?

লেখাটা শুরু করেছিলাম যার নামে, সেই সাকিব আল হাসানও জনপ্রিয় ক্রীড়া সাংবাদিন উৎপল শুভ্রকে বলেছিলেন এক সময়ে- ‘লিটনের ব্যাটিং দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। কী যে সুন্দর ব্যাটিং করে!’ আর মাশরাফি তো তাকে মেপে ফেলেছেন বিরাট কোহলির সাথে। বলেছেন ‘আমার দুজন ব্যাটারের ব্যাটিং দেখতে ভালো লাগে। একজন বিরাট কোহলি, অপরজন লিটন দাস।’

যেভাবে ছুটছেন লিটন, বিরাট কোহলির অভাব তিনি ভুলিয়ে দিতেই পারেন। সেই সাথে একটা প্রত্যাশারও জন্ম দিতে পারেন। যেখানে আগামী প্রজন্ম শুধুই বিরাট কোহলি নয়; লিটন দাসও হতে চাইবে। আর লিটন নিশ্চয়ই তা পারবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়