স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পক্ষে শক্তিশালী অবস্থানে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:৪৮ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বা গ্র্যাজুয়েশনের মানদণ্ড পূরণ ও উত্তরণের সুপারিশ লাভ করতে চলেছে বাংলাদেশ। উত্তরণ প্রক্রিয়াকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষ্যে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা আরো বেশি সময় অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজিত এক্সপার্ট গ্রুপ সভার এক বৈঠকে গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএন-সিডিপি’র কাছে এ আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।

অনলাইনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ। বৈঠকে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থান তুলে ধরেন ইআরডির সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

সভায় আশা প্রকাশ করা হয়, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সব মানদণ্ড পূরণ করবে। একই সঙ্গে ওই উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে সিডিপির কাছে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি প্রস্তুতিকালীন সময় দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত ২০১৮ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত সিডিপির সর্বশেষ পর্যালোচনা সভায় প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হয়েছিল। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোনো দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করে।

সিডিপির প্রবিধান অনুযায়ী, উত্তরণের সুপারিশ লাভের পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় ভোগ করতে পারে। আগামী মাসে ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় উত্তরণের সুপারিশ লাভের পর পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল শেষে বাংলাদেশের উত্তরণ ২০২৬ সালে কার্যকর হবে।

এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।          

অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হতে চলেছে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। তিনি তার উপস্থাপনায় সামষ্টিক অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে তার ওপর আলোকপাত করেন। 

ইআরডি সচিব উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনের লক্ষ্যে উন্নয়ন অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আহ্বান জানান।    

বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, জেনেভায় বাংলাদেশের জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান, ইআরডির যুগ্ম সচিব ও সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আজিজ উপস্থিত ছিলেন।