স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাবেন আইনজীবীরা

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার

আনিসুল হক

আনিসুল হক

আইনজীবীদের জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় আড়াই মাস আইনজীবী বিশেষ করে জুনিয়র আইনজীবীরা তাদের প্রাকটিস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে অনেকেই আর্থিক সংকটে পতিত হয়েছেন। অনেকেই কষ্টে আছেন। তাদের এই কষ্ট লাঘবের জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের মাধ্যমে এই ঋণ দেয়া হবে।

রোববার ফরিদপুরে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আট তলাবিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলার বিচার হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার হয়েছে— এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, হেফাজতে মৃত্যুর কারণে এই উপমহাদেশে প্রথম সাজাও তার সরকারের সময় হয়েছে। অপরাধীদের সাজা দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এই দেশে সবাইকেই আইন মানতে হবে এবং এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিচার হবে এবং আইনসঙ্গত সাজা হবে। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের ওপরে তখনই আস্থা রাখবে, যখন তারা সঠিক বিচার পাবে। বিচারক ও আইনজীবীরা বিচার বিভাগকে কার্যকর করার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান দুটি অঙ্গ। রাষ্ট্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে বিচার বিভাগ যেমন একটি, ঠিক তেমনই বিচার বিভাগকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বিচারক ও আইনজীবীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান। এই দুই প্রতিষ্ঠান মিলে জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের যে উন্নয়নের ধারা তা চলবে। দুই হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে যে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, সেটাও বাস্তবায়ন হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে জনগণ এসব কাজের সুফল পাবেন। বর্তমানে ৩৭ লাখ মামলা জট রয়েছে। এ জট কমাতে হবে। আমরা এই মামলা জট কমানোর চেষ্টা করবো এবং জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবো। জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়া না গেলে তার পরিণতি কী হবে সেটা মুখে উচ্চারণ করাও উচিত নয়।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় ও উন্নয়নে বিশ্বাসী। ব্রিটিশরা যে আদালত ভবনগুলো তৈরি করে গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত অন্যান্য সরকার সেগুলোর কোনো পরিবর্তন করেনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেয়া সংবিধানে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের কথা থাকলেও সামরিক ও খালেদা জিয়ার সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগের অনেক পজিটিভ পরিবর্তন আনেন এবং এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ করা হয়।

ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. সেলিম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর ১ ও ৪ আসনের এমপি যথাক্রমে মনজুর হোসেন ও মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন), আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এওএম খালেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।