পতিতালয়ের শিশুরা যাবে স্কুলে, থাকবে আবাসিক হোটেলে

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০৩:৫৩ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ রোববার

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

খুলনার দাকোপের বানিশান্তা পতিতালয়ে জন্ম নেয়া মেয়ে শিশুরা বংশ পরম্পরায় পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত হতো। আর ছেলে শিশুরা দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়তো। তবে এবার অসহায় এসব শিশুদের জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন।

পতিতাপল্লীতে জন্ম নেয়া শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও মায়েদের থেকে আলাদা রাখতে আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে মায়েরা শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। কিন্তু এসব শিশুরা কখনোই পতিতাপল্লীতে যেতে পারবে না। পতিতালয়ের পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবনব্যবস্থা পরিবর্তন ও তাদেরকে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে এ উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ডিসি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিয়াশান্তা যৌনপল্লির শিশুদের বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণের উদ্বোধন করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।

মন্ত্রী রোববার দুপুরে তার মন্ত্রণালয় থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিয়াশান্তা যৌনপল্লির শিশুদের আবাসিক শিক্ষা ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণের উদ্বোধন করেন।

খুলনা ডিসির সম্মেলন কক্ষে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। শিশুরা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। সরকার সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য নিরাপদ দেশ গড়তে সরকার সবকিছুই করছে। শিশুরা যদি আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্যে বেঁচে থাকে তাহলে তারা দেশ ও জীবনকে ভালোবাসবে। দেশের এই প্রথম কোনো জেলায় এ ধরনের ব্যতিক্রম উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগের জন্য মন্ত্রী খুলনার ডিসিকে ধন্যবাদ জানান।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নে এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি এখন বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। যার যার অবস্থান থেকে কাজ করলে দেশ সামনে এগিয়ে যাবে। মন্ত্রী দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

জুম অ্যাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস, সংরক্ষিত মহিলা এমপি গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং খুলনা সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক মো. আব্দুর রহমান। খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ডিসি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন, এডিসি (সার্বিক) গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান, সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক খান মো. মোতাহার হোসেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেব আলী, মুক্তিযোদ্ধা মো. আলমগীর কবির প্রমুখ।

উল্লেখ্য, খুলনা জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দাকোপের বানিয়াশান্তা যৌনপল্লীর শিশুদের আবাসিক শিক্ষা ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় এক কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮ টাকা।