ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উঠানে সবজি চাষ

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০২:৫২ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উঠানে সবজি চাষ

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উঠানে সবজি চাষ

দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ‘পারিবারিক পুষ্টি বাগান’স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভাগ। ফলে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করছে পারিবারিক বিষমুক্ত সবজি পুষ্টি বাগান।

বসতবাড়ির আঙিনা ও পরিত্যক্ত জায়গায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ও ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষকরা বাড়ির উঠানে সবজি চাষ করছেন। বিনামূল্যে সবজি বীজ পেয়ে কৃষকরা বাড়ির উঠানে চাষকৃত সবজি যেমন পরিবারের চাহিদা পূরণ করছে, তেমনি সবজি বিক্রি করে স্ব”ছলতার মুখ দেখছে দরিদ্র পরিবারের লোকজন।

গফরগাঁও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দত্তেবাজার ইউনিয়নের ‘কন্যামন্ডল আশ্রয়ন প্রকল্পে ৭২টি পরিবার বসবাস করছেন । আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০টি বসত ঘরের আঙ্গিণায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে । আরও ১০টি পরিবারের আঙ্গিণায় পুষ্টি বাগান স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে । পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পরিবারের আঙ্গিণায় স্থাপন করা হবে। এছাড়াও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙ্গিণায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রদর্শনী পর্যায়ক্রম ও স্থাপন করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫শত টি পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের সবজির বীজ, সার, ফলের চারা, বীজ সংরক্ষণের পাত্র, বাগানে পানি দেওয়ার ঝাঝরিসহ অন্যান্য সব উপকরণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন মৌসুমের শুরুতে মুলা, লালশাক, পাটশাক, পুঁইশাক, লাউ, পালংশাক, শিম, ডাটা, ডেরস, করলা, লালশাক, চিচিংঙ্গা, টমেটো, বেগুন ও কলমি শাকসহ নানা প্রজাতির সবজি চাষ করছেন।

গফরগাঁও উপজেলা দত্তেরবাজার ইউনিয়নের কন্যামন্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ম্যানেজার মফিজ উদ্দিন বলেন, উপ-সহকারীর কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে বাড়ির উঠানে ফাঁকা জায়গায় সবজি বাগান তৈরি করেছি। পুষ্টি বাগান থেকে আমার নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে আশেপাশের মানুষকে শাক-সবজি দিচ্ছি। এ ছাড়া বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকাও আয় করছি।

কন্যামন্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, উঠানের পতিত জায়গায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় সবজির বাগান করি। আমাদের সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি। আশ্রয়ন প্রকল্পের আশপাশের লোকজনও বাড়ি এসে সবজি কিনে নিয়ে যায়।

গফরগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হচ্ছে । অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় আমরা কৃষকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজির বীজ ও ফলের গাছ বিতরণ করেছি। উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়নে গত ২ বছরে প্রায় ৫০০টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বাগান স্থাপন ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সব সময় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এতে কৃষকের নিজের যে পুষ্টি দরকার তারা তাদের বাগানে উৎপাদন করে সেই পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারছেন। একই সঙ্গে শাক-সবজি উৎপাদন করছে সেটা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছে।