ঘুরে আসুন বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দির

ভ্রমণ প্রতিবেদক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১১:৩৮ এএম, ৪ জুলাই ২০২২ সোমবার

বান্দরবানে অবস্থিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ের মধ্যে অন্যতম ‘বুদ্ধ ধাতু জাদি’ মন্দিরে বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। মন্দিরটি স্বর্ণ মন্দির নামেই বেশি পরিচিত।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান শহর থেকে নয় কিলোমিটার দূরে বালাঘাটা এলাকার সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এ মন্দিরটিতে দাঁড়িয়ে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়।

স্থানীয় মারমাদের জন্য ১৯৯৫ সালে এ মন্দিরটি নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২০০৪ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় এ হীনযান বৌদ্ধ মন্দিরের নির্মাণকাজ শেষ হয়। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

বৌদ্ধ (ধাতু) সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধ ধাতু জাদি মন্দির একটি পবিত্র স্থান ও উপাসনালয় হিসেবে বিবেচিত। মিয়ানমারের কারিগরদের দিয়ে কাঠের তৈরি অনন্য এ মন্দিরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে।

নামমাত্র প্রবেশ ফি দিয়ে দর্শনার্থীরা এ নির্মাণশৈলী এবং এর মনোরম দৃশ্য দেখতে পারেন। মন্দিরটির ফটক, চারপাশের রেলিং ও জমিনজুড়ে সোনালি রঙের শিল্পকর্ম ও মুর‌্যাল রয়েছে। মন্দিরটির সবচেয়ে ওপরে থাকা গম্বুজটিকেও নানা রূপে সজ্জিত করা হয়েছে।

মূল মন্দিরের বাইরে থাকা বিভিন্ন আকৃতির ১২টি বৌদ্ধ মূর্তি সামগ্রিক নান্দনিকতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। প্রতিটি মূর্তিতে খচিত বিভিন্ন ‘মুদ্রা’ বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় এক হাজার ৬০০ ফুট উঁচুতে স্থাপিত এ মন্দিরটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন সময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ আসে।

পূজা বা ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করা ছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো পর্যটককে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতি বছর জানুয়ারির শেষে এবং ফেব্রুয়ারির শুরুতে মেলার আয়োজন করা হয়। পূর্ণিমার রাতে বুদ্ধকে স্মরণ করতে মন্দিরটিতে হাজার হাজার মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়।

এখানে দেশ বিদেশ থেকে অনেক বৌদ্ধ ধর্মালম্বী দেখতে এবং প্রার্থনা করতে আসেন। এর অপর নাম মহাসুখ প্রার্থনা পূরক বুদ্ধধাতু চেতী। গৌতমবুদ্ধের সম-সাময়িক কালে নির্মিত বিশ্বের সেরা কয়েকটি বুদ্ধ মুর্তির মধ্যে একটি এখানে রয়েছে। এই প্যাগোডাটি দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার সেরা গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সুউচ্চপাহাড়ের উপর দেবতা পুকুর নামে একটি পানি সম্বলিত ছোট পুকুর আছে।

এই প্যাগোডা থেকে বান্দরবানের বালাঘাটা উপশহর ও এর আশপাশের সুন্দর নৈস্বর্গিকদৃশ্য দেখা যায়। এ ছাড়া বান্দরবান রেডিও ষ্টেশন, বান্দরবান চন্দ্রঘোনা যাওয়ার আকাঁবাকাঁ পথ ও দর্শনীয়। এই প্যাগোডা একটি আধুনিক ধর্মীয় স্থাপত্যের নিদর্শন। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে এখানে মেলা বসে। এই প্যাগোডা বা জাদীটিই স্বর্ণ মন্দির। এ প্যাগোডাটি পুজারীদের জন্য সারাদিন খোলা থাকে আর ভিন্ন ধর্মাবলী দর্শনার্থীদের জন্য বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয় । প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা।

বর্তমানে স্বর্ণমন্দির উপাসনালয়টি বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিনেবে পরিগনিত হচ্ছে। এটি বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের একটি উল্লেখযোগ্য উপাশনালয়। 

কীভাবে যাবেন:

ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে পারেন। বদ্দারহাট থেকে বান্দারবানের উদ্দেশে পূবালী ও পূর্বানী পরিবহনের বাস যায়। এরপর বান্দরবান বাস ষ্টেশন থেকে রিক্সা অথবা টেক্সি করে যাওয়া যায় । সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত এখানে গাড়ী চলাচল করে।

কোথায় থাকবেন:

বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।