উপজেলার ইন্টারনেটের গতি হবে ১০০ জিবিপিএস, জেলায় ৩০০: প্রকল্প আসছে

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১১:৪৮ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে ফাইভজি চালুর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে ইন্টারনেটের গতি অন্তত ১০০ জিবিপিএসে নেওয়ার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার, যেজন্য তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হবে।

হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পাশাপাশি জেলা পর্যায়েও ইন্টারনেটের গতি ৩০০ জিবিপিএসে (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) উন্নীত করার উদ্যোগটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে বিটিসিএল।

পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে বিদ্যমান অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির সক্ষমতা বাড়ানো হবে প্রকল্পটির আওতায়।

মঙ্গলবার প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন -আল-রশীদ।

অনুমোদন পেলে আগামী দুই বছরের মধ্যে এক হাজার ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ফাইভজির উপযোগীকরণে বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি শেষের পরিকল্পনা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল)।

উচ্চগতির এ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা গেলে রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানির কাছ থেকে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহারের জন্য সেবা নেবে মোবাইল ফোন অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি) কোম্পানিগুলো।

বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন বলেন, দেশে বর্তমানে ৩৪ হাজার ১০০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ্য অপটিক্যাল ফাইবার লাইন টানা আছে। এরমধ্যে প্রকল্পটির মাধ্যমে মাত্র তিন হাজার কিলোমিটার লুপ লাইন টেনে বিকল্প অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হবে।

এতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে উচ্চগতির ইন্টারেনেট সংযোগের ব্যবস্থা করা যাবে তিনি বলেন, বর্তমানে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যে অপটিক্যাল ফাইবার রয়েছে তা দিয়ে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ জিবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেওয়া হচ্ছে।

“কিন্তু ফাইভজির জন্য ইন্টারনেটের গতি অন্তত ১০০ থেকে ২০০ জিবিপিএস হতে হয়। এ গতির ইন্টারনেট দিয়ে নতুন প্রজন্মের নেটওয়ার্কের সুবিধা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ পাবেন না। তাই ফাইভজি চালুর সুফল ভোগের সুযোগ সৃষ্টি করতে অপটিক্যাল ফাইবার সঞ্চালন লাইন ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির শক্তি বাড়িয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।“

এমডি বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ‘রিং প্রযুক্তির’ মাধ্যমে বিকল্প একটি লাইন টেনে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। এতে একটি ফাইবারের কোনও সমস্যা হলে আরেকটি দিয়ে যেন ব্যাকআপ দেওয়া যায়।

“রিং প্রযুক্তি এমন এক প্রযুক্তি যেটির মাধ্যমে ছোট একটা অংশে কেবল স্থাপনের মাধ্যমে অনেক বড় লাইনজুড়ে ব্যাকআপ দেওয়া যায়।”

প্রকল্প প্রস্তাবের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলা, ৪৭২টি উপজেলা এবং ১ হাজার ২১৬টি ইউনিয়ন বিটিসিএলের ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। দেশে বর্তমানে ৪৯৫টি উপজেলা এবং চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন রয়েছে।

ভৌগলিক সীমাবদ্ধতার কারণে এখনও কিছু জেলায় নির্ভরযোগ্য উচ্চগতির অপটিকাল লিঙ্কের পরিবর্তে স্বল্প নির্ভরযোগ্য রেডিও লিঙ্কের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও কয়েকটি জেলায় এখনও কোনও ‘রিডান্ডেন্ট’ অপটিকাল সংযোগ না থাকায় সেগুলোতে নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়নি।

এমন প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে বিটিসিএল রিডান্ডেন্ট অপটিক্যাল ফাইবার সুবিধার আওতায় আনতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে।

বিটিসিএল এমডি রফিকুল বলেন, দেশের বাকি উপজেলা ও ইউনিয়নকেও পর্যায়ক্রমে উচ্চগতির ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী অবকাঠামো গড়ে তুলতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযোগ গড়ে তোলা, নির্ভরযোগ্যতা, ব্যান্ডউইথ ও ‘ল্যাটেন্সির’ (ডেটা প্রবাহে বাধা) মতো বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।