ন্যাটোঃ উদ্দেশ্য ও মূলনীতি

ফিচার ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১০:২৩ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা North Atlantic Treaty Organisation (NATO) ন্যাটো। ন্যাটোর বিস্তারিত অর্থ—শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ইউরোপীয় এবং উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর প্রতিষ্ঠিত একটি অনাক্রমনাত্মক জোট।

স্নায়ুযুদ্ধের প্রাক্বালে ন্যাটোর জন্ম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালের এপ্রিলে—যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং আরো ৮টি ইউরোপীয় দেশসহ ১২ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য একে অপরকে রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে উত্তর আটলান্টিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। পরে কয়েক দশক ধরে জোটটি বড় হতে থাকে। বর্তমানে ন্যাটোর সদস্য সংখ্যা ৩০। ন্যাটো হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক সংগঠন।

ন্যাটোর উদ্দেশ্য কী?

এর মূল উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসনের হাত থেকে পশ্চিম বার্লিন এবং ইউরোপের নিরাপত্তা বাস্তবায়ন করা। ন্যাটো একটি যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি, যে চুক্তির আওতায় জোটভুক্ত দেশগুলো পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর ন্যাটো তাদের রক্ষায় মাঠে নামে। এর প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্র তাদের সামরিক বাহিনীকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখতে বদ্ধপরিকর।

বাস্তবে এ মূলনীতির অর্থ কী

নর্থ আটলান্টিক চুক্তির ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে যৌথ প্রতিরক্ষা নীতির উল্লেখ আছে। এ অনুচ্ছেদ নিশ্চিত করে— যেকোনো এক সদস্যকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে জোটের সকল সদস্যের সম্পদ ব্যবহার করা যাবে। বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র আছে যাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল। এসব সদস্যদের জন্য ন্যাটোর এই যৌথ প্রতিরক্ষা নীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, আইসল্যান্ডের কোনো স্থায়ী সেনাবাহিনী নেই।

যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সবচেয়ে বড় ও ক্ষমতাধর সদস্য, তাই জোটের যেকোনো দুর্বল সদস্য মার্কিন সুরক্ষা বলয়ের অধীনে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ন্যাটোর ৫ম অনুচ্ছেদের মাত্র একবার প্রয়োগ হয়েছিল। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি হামলার পর এ অনুচ্ছেদের আওতায় আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যোগ দেয় ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরা।

তবে এর বাইরেও ন্যাটো অন্যান্য ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়, ২০০৩ সালে ইরাক সংকটের সময় এবং ২০১২ সালে সিরিয়া পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া হিসেবে ন্যাটো প্যাট্রিয়ট মিসাইল মোতায়েনের মাধ্যমে যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপন করেছিল। এই তিনবারই ন্যাটো তুরস্কের অনুরোধের ভিত্তিতে প্যাট্রিয়ট মিসাইল মোতায়েন করে।

চিনে নিন ন্যাটোর ৩০ সদস্য রাষ্ট্র

ন্যাটোর ৩০ সদস্য দেশ হলো— আলবেনিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনেগ্রো, নেদারল্যান্ডস, উত্তর মেসিডোনিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।