দেশে ব্যাংকারদের জন্য সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেশে প্রথমবারের মতো ব্যাংকারদের জন্য সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া লক্ষ্য অর্জন করতে না পারলে কিংবা অদক্ষতার অজুহাতে কোনো ব্যাংকারকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে, যা কার্যকর হবে আগামী মার্চ থেকে।

নির্দেশনায় বলা হয়, ট্রেইনি সহকারী কর্মকর্তা (জেনারেল ও ক্যাশ), সহকারী কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ২৮ হাজার টাকা হবে। আর সেই ধাপ শেষ হলেই বেতন-ভাতা দাঁড়াবে ৩৯ হাজার টাকায়। আর ব্যাংকের অফিস সহায়কদের (নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মেসেঞ্জার) সর্বনিম্ন বেতন ২৪ হাজার টাকা হবে। পাশাপাশি যেসব ব্যাংক তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সেবা নেয় তাদের বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে অফিস সহায়কদের বেতনকে বিবেচনায় নিতে হবে। তবে নির্দেশনাটি এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনায় আরো বলা হয়, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইওর সঙ্গে সর্বনিম্ন পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতার পার্থক্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা কমানো যাবে না। পাশাপাশি চাকরি স্থায়ী ও বার্ষিক বেতন বাড়াতে আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা যাবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একনিষ্ঠতা, নৈতিকতা, মনোবল ও কর্মস্পৃহা অটুট রাখার লক্ষ্যে তাদের যথাযথ বেতন-ভাতা প্রদান করতেই হবে। তবে সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে যে, কিছু ব্যাংক এন্ট্রি লেভেলের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা ইচ্ছামাফিক নির্ধারণ করছে। একই ব্যাংকের অন্যান্য উচ্চপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিদ্যমান বেতন-ভাতার তুলনায় অনেক কম। উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার মধ্যে অস্বাভাবিক ব্যবধান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো জানিয়েছে, কোনো কোনো ব্যাংকে একই পদে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভিন্ন ভিন্ন বেতন-ভাতা প্রাপ্ত হচ্ছেন। আবার নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারা বা অদক্ষতার অজুহাতে বিভিন্ন ব্যাংকে বেতন-ভাতার ভিন্নতার কারণে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নিজ প্রতিষ্ঠান মনে করে একনিষ্ঠ ও অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে স্থায়ীভাবে ব্যাংকের কাজে মনোযোগী হওয়ার মনোভাব গড়ে ওঠে না। ফলে অদক্ষতা, অসম প্রতিযোগিতা ও নৈতিক অবক্ষয়সহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এজন্য ভবিষ্যতে মেধাবী ব্যক্তিরা যাতে ব্যাংকিংকে আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হন সেজন্য বেতন-ভাতা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে দিয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় শিক্ষানবিশ পদের বেতন পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়ে গর্ভনর ফজলে কবির বলেছিলেন, ব্যাংকে এন্ট্রি লেভেলের চাকরিজীবীদের মজুরি খুব কম দেওয়া হয়। এটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন করা উচিত। কারণ এটি মানসম্মত বেতন প্রতিফলিত করে না। 

তিনি আরো বলেছিলেন, ব্যাংকগুলো যদি শিগগির এন্ট্রি-লেভেল পদের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করে এবং শিক্ষানবিশদের উপযুক্ত বেতন দেয়। অন্যথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেতন কাঠামো সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

তারও আগে, ব্যাংকারদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংককে তাদের কর্মচারীদের পুনরায় নিয়োগ দিতে বলেছিল, যারা করোনাকালীন ছাঁটাই বা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরে কিছু ব্যাংক চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনরায় নিয়োগের উদ্যোগ নেয়।