তারেকের নির্দেশে পোশাক কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি শ্রমিকদলের
নিউজ ডেস্ক
নতুনের সাথে আমরা
প্রকাশিত : ১১:২৬ এএম, ১১ মে ২০২১ মঙ্গলবার
ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন সেখানে। বাংলাদেশে যাতে সংক্রমণ না বাড়ে সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে করোনা ঠেকাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে আসন্ন ঈদে যাতে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে জনসমাগম কম হয় সেজন্য সরকার তিন দিনের বেশি ছুটি দিতে নিষেধ করেছে কারখানা মালিকদের। মালিক-শ্রমিকরা আলোচনা করে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছিলেন। সরকারের নির্দেশনামতে এখন পর্যন্ত ৯০ ভাগের বেশি কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাসও দেয়া হয়েছে। কিন্তু গত দুই দিন ধরে হঠাৎ করে কিছু কারখানায় বিক্ষোভের নামে ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, করোনা সামলাতে সরকারকে ব্যর্থ দেখাতে শ্রমিকদের উস্কে দিচ্ছে বিএনপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল।
জানা গেছে, দেশে সকল আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি দল হিসেবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুর্নীতি, বিএনপির আগুন সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ মানুষ গত এক যুগে দলটির কোন আন্দোলনেই সাড়া দেয় নি। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মানুষ সন্তুষ্ট। ফলে ক্ষমতায় যেতে ব্যর্থ হয়ে সরকারের উন্নয়ন এবং করোনা ব্যবস্থাপনায় সাফল্যকে ব্যর্থ হিসেবে দেখাতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি। দলের নেতারা আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিক্ষোভ হিসেবে দেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এদিকে ঈদের ছুটি বাড়ানোর নামে যাতে গাদাগাদি করে শ্রমিকরা ঢাকা ছাড়ে সে চেষ্টাও চালাচ্ছেন বিএনপির নেতারা। তাদের ধারণা গাদাগাদি করে শ্রমিকরা বাড়ি গেলে করোনা সংক্রমণ বাড়বে। এতে করে সরকারকে ব্যর্থ হিসেবে দেখিয়ে আন্দোলনের সুযোগ তৈরি হবে।
সূত্র জানায়, গত শনিবার শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিমের সাথে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে নয়া পল্টনের বিএনপি অফিসে অনলাইন বৈঠকে যুক্ত হন তারেক রহমান। এসময় শ্রমিক দলের নেতাদের সাথে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ঈদে সরকারের তিন দিনের ছুটি ঘোষণাকে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী হিসেবে দেখিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলতে নির্দেশ দেন তারেক রহমান। আর এজন্য শ্রমিক দলের নেতাদের বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত হয়ে শ্রমিক অঞ্চলে গিয়ে বিক্ষোভের নামে ভাঙচুরের নির্দেশ দেন। বৈঠকে থাকা শ্রমিক দলের এক নেতা বলেন, তারেক রহমান আমাদের বলেছেন, শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাতে সুবিধা হয়। আর যদি এভাবে শ্রমিক ক্ষেপিয়ে তুলে জনসমাগম বাড়ানো যায় তাহলে করোনা বাড়বে। করোনা বাড়লে সরকারকে বিপদে ফেলা যাবে।
জানা গেছে, আজ সোমবার টঙ্গীর মিলগেটে হামীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার কিছু শ্রমিককে নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা। তারা গাড়িঘোড়া ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ এসে সরিয়ে দেয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক রনি ইসলাম বলেন, আমাদের বেতন দিয়েছে মালিকপক্ষ। কিন্তু ছুটি কম দেওয়ায় আমরা বাড়ি যাব কি না সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। টঙ্গী শ্রমিকদলের নেতা সালাউদ্দিন সরকার ভাই সকালে আমাদের ডেকে বলেন, রাস্তা অবরোধ করলেই মালিক ছুটি বাড়াবে। তাই আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু এখানে শ্রমিকদের বাইরে কিছু লোক ভাঙচুর করেছে।
এদিকে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমিকেরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে বিএনপির কর্মীরা এসে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। শ্রমিকদের ভেতর ঢুকে বিএনপির কর্মীরা বেপরোয়াভাবে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকায় পুলিশ মৃদু প্রতিহত করে। বিএনপির কর্মীদের হামলায় পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।