ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মানবদেহের লুকায়িত ১১ অংশ, যা আজো অজানা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ২৩ আগস্ট ২০২০  

ছবি: রহস্যময় মানবদেহ

ছবি: রহস্যময় মানবদেহ

রহস্যময় মানব শরীরের রহস্য অনেকেরই অজানা। বিজ্ঞানীরা আজো মানব শরীর সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় জানতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। শরীরের তেমনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে আজকের প্রতিবেদন।

> চোখের পাতায় রয়েছে একটি ছিদ্র। যদি আমাদের চোখের পাতা দুটিকে সরিয়ে ফেলি তাহলে চোখের ভিতরের দিকে এক কোণায় আমরা একটি ছিদ্র খুঁজে পাব। যাকে ল্যাক্রিমাল পাংটাম বলে। চোখের নিচের পাতার কোণায় এটি থাকে এবং অশ্রু বের হয়ে যেতে সহায়তা করে।

> বাহুর সাময়িক পেশী সম্পর্কে অনেকেই জানি না।  প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষের কনুই থেকে হাতের তালু পর্যন্ত বহমান এক প্রকারের সাময়িক পেশী থাকে। যাকে পালমারিস লংগাস বলে। বৃদ্ধাঙুল আর তর্জনী একসঙ্গে করে কব্জির পেশী শক্ত করলেই এই সাময়িক পেশী হাতের তালুর ঠিক নিচে শিরার মতো জেগে উঠবে। যদিও এটি আসলে কোনো শিরা নয় বরং এটি একটি মাংসপেশি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটা আমাদের কোনো কিছু হাতে ধরে রাখার কাজে ব্যবহৃত হয়।

> ত্বকেরও নিজস্ব আলো রয়েছে। জাপানের একদল বিজ্ঞানী অতিসংবেদনশীল ক্যামেরা দিয়ে অন্ধকারে মানবদেহের ওপর একটি পরীক্ষা চালায়। সেই পরীক্ষায় দেখা যায়, মানুষের দেহের কপাল, গাল এবং ঘাড়ের পাশ থেকে উজ্জ্বলতা বিচ্ছুরিত হয়। এই উজ্জ্বলতা শেষরাতের দিকে অনুজ্জ্বল এবং শেষ বিকেলে সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। যদিও এই আলো খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়।

> গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় জানা গেছে, মানবদেহের পায়ের পাতায় একধরনের প্রোটিন থাকে। যা হাঁটার সময় শরীরের ভারসাম্য রক্ষার্থে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই বিশেষ ধরনের প্রোটিন আমাদের হাঁটার সময় পায়ের পাতায় এক বিশেষ ভঙ্গিমায় প্রবাহিত হতে থাকে। প্রবাহিত হওয়ার সময় এই প্রোটিন বিভিন্ন গুচ্ছে ভাগ হয়ে গিয়ে মাত্র আট ন্যানোমিটার প্রবাহিত হয়ে থাকে।

> কানের পিছনে রয়েছে তিনটি পেশী। মানবদেহের কানের বাইরের অংশে অরিকুলার পেশী এগুলো। আমাদের পূর্বপুরুষরা এই পেশী সঞ্চালনের মাধ্যমে কান নড়াচড়া করতে পারতেন। যেমনটি অন্যান্য অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন কুকুর, বিড়াল করে থাকে। আধুনিক মানবদেহে এই পেশীর খুব একটা ব্যবহার নেই। মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ এই পেশী সঞ্চালনের মাধ্যমে তাদের কান নড়াতে সক্ষম।

> আতঙ্কিত হলে বা ভয় পেলে আমাদের লোমের গোড়ায় থাকা বিশেষ এক ধরনের পেশী সঞ্চালিত হয়। সাধারণত অতি মাত্রায় বিস্মিত হলে বা ভয় পেলে গায়ে কাটা দেয়ার যে ঘটনা ঘটে তা এই পেশীর সঞ্চালনার ফলেই হয়ে থাকে। মানুষের দেহে অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় লোম কম থাকায় লোমের গোড়ায় এক ধরনের শিহরণ দেখা যায়।

> ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে গবেষকগণ শারীরবিজ্ঞান বইতে মানবদেহের নতুন এক অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। মেসেনতারি নামক এই অঙ্গ পেটের হজমক্রিয়া সম্পাদনের জায়গায় দুই ভাঁজওয়ালা গহ্বর হিসেবে উপস্থিত থাকে। বিজ্ঞানীরা এই অঙ্গটির সঠিক ভূমিকা সম্পর্কে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারেনি। তবে এটি পাকস্থলীর অন্ত্রের সঙ্গে তলপেটের সংযোগ রক্ষা করে।

> ২০১৩ সালে একদল চক্ষুগবেষক চোখের কর্নিয়া সম্পর্কিত নতুন এক তথ্য বের করেন। তারা জানান, মানুষের চোখের কর্নিয়া অংশে মোট ৬টি স্তর আছে। এটি ‘ডুয়া স্তর’ নামে নামকরণ করা হয়। প্রতিটি স্তর এক ইঞ্চির ১০ হাজার ভাগের এক ভাগের চেয়েও ক্ষুদ্র।

> অনেকেই লেজ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মাতৃদেহে থাকা অবস্থায় মানবভ্রূণে লেজের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যা ভ্রূণ সৃষ্টির ১০ সপ্তাহের মধ্যে তৈরি হয়। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহের ভেতরে এই লেজের মতো অংশ আজীবন উপস্থিত থাকে। কিছু ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনায় মানবশিশু এই লেজের ন্যয় অংশ নিয়েই জন্ম নেয়, যা পরবর্তীতে সার্জারির মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা সম্ভব।

> ২০১৫ সালে একদল গবেষক মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশ খুঁজে পান, যা সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত। আলঝেইমারস এবং অন্যান্য স্নায়ুবিক রোগ প্রতিরোধের চেষ্টায় এ গবেষণা নতুন দিক উন্মোচন করে।

> বিজ্ঞানীরা গবেষণায় পেয়েছেন, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের নাসারন্ধ্রে একধরনের অনুভূতিপ্রবণ অঙ্গ থাকে। যা ফেরোমনের উপস্থিতি জানান দিতে ব্যবহৃত হয়। আবিষ্কারকের নামানুসারে এই অঙ্গের নাম দেয়া হয় ‘জ্যাকবসন অঙ্গ’। মানবদেহে এই অঙ্গ আছে কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। তবে মানবভ্রূণ মাতৃদেহে থাকা অবস্থায় এই অঙ্গ ভ্রূণে উপস্থিত থাকে যা জন্মানোর পরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নাসারন্ধ্রে গুটির ন্যায় একধরনের অংশ থাকে যা আসলে জ্যাকবসন অঙ্গ, তবে সেখানে কোনো অনুভূতি স্নায়ু থাকে না।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়