আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র: শিলিগুড়ির রোহিণী পার্ক
জ্যোতির্ময় দত্ত

ছবি: সংগৃহীত
জীবনে একঘেঁয়ে কাটাতে ভ্রমণের বিকল্প হয় না। সেজন্য সুযোগ পেলেই পর্যটন এলাকায় ছুটে যান সবাই। এক্ষেত্রে আদর্শ জায়গা হতে পারে সাগরের কোলঘেঁষে অথবা পাহাড়ে গড়ে ওঠা পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটকদের জন্য এমনই এক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের শহর শিলিগুড়ির অদূরে পাহাড়ের ভাঁজে গড়ে ওঠা রোহিণী পার্ক।
যদিও করোনার কারণে বাংলাদেশসহ বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভারতের দরজা এখনো খোলেনি। তবে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের যে কোনো প্রান্তের মানুষ সুযোগ পেলেই চলে যেতে পারেন শিলিগুড়ি শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রোহিনী এলাকার এই পর্যটন কেন্দ্রে। এই পার্কে ঘোরার পাশাপাশি মিলবে রোহিনী মাতার মন্দিরের দর্শনও।
পার্কের সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যে, কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষের রুটিনে ছুটি বলতে শুধু একটি দিন (সাপ্তাহিক ছুটি)। তাই সারা সপ্তাহ ব্যস্ততার মাঝে থেকে এই একটা দিন পরিবারকে নিয়ে কিছুটা সময় কাটাতে চায় অনেকে। অনেকেই সন্ধানে থাকে শহরের আশপাশে খুব একটা দূরে না গিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে এবং কিছুটা মানসিক বিশ্রাম নিতে। তাই যারা এই ধরনের উইকেন্ড ডেস্টিনেশনের খোঁজে আছেন, তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে কার্শিয়াং মহকুমার রোহিনী মন্দির এবং রোহিনী পার্ক।
পার্কটির কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে এখানে এই মুহূর্তে বিনোদনের তেমন রসদ না থাকলেও রয়েছে পাহাড়ি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। বেশ কয়েকবছর আগে এই পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গের গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ)। কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেই কাজে আবার গতি আসছে।
পর্যটকদের কাছে পার্কের আকর্ষণ বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে বিশাল একটি লেক। লেকের ধারে আছে বসার ছোট ছোট কটেজ। চারপাশের পাহাড়ের ঢালে আছে চা বাগান। পার্কের একেবারে উঁচু কেন্দ্রে গেলে এখান থেকে দেখা যাবে পাহাড়ের মনোরম প্রকৃতি। আবহাওয়া মুখ ভার না করলে লেকের জলে ভেসে উঠবে সম্পূর্ণ পাহাড়ের সৌন্দর্য। চলছে রোপওয়ে তৈরির কাজ। এই কাজ শেষ হলে রোপওয়েতে বসে দেখা যাবে সম্পূর্ণ রোহিনী এলাকা, মন্দির ও পার্কটিকে।
পার্ক থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে বহু পুরনো রোহিনী মাতা মন্দির। সেখানেও কিছুটা সময় কাটাতে পারেন দর্শনার্থীরা। মন্দিরের প্রবেশপথে রয়েছে বহু পুরনো একটি বট ও অশ্বত্থ গাছ। যার চারপাশে নেমেছে প্রচুর ঝুরি (ঝুলে পড়া জটা)। মন্দিরে ঢোকার মুখে রয়েছে একটি পুকুর। এরপর কিছুটা হেঁটে ওপরের দিকে উঠলে দর্শন হবে রোহিনী মাতার মন্দিরের। মন্দিরের ভেতর প্রতিমা বলতে রয়েছে একটি বিশাল আকৃতির পাথর। সেই পাথরকেই ‘রোহিনী মাতা’ বলে পূজো করেন অনুসারীরা। তাদের বিশ্বাস, এখানে যা চাওয়া হয় তাই নাকি পূরণ করেন রোহিনী দেবী।
ভালো হয় সকালের দিকে গেলে। কারণ তখন মন্দির খোলা থাকে। বর্তমানে মন্দিরটির জনপ্রিয়তা বাড়ায় রোববার (ভারতের ছুটির দিন) পর্যটকদের ভিড় থাকে। বেশ কিছু বাংলা সিনেমার শুটিং হয়েছে এই মন্দিরে।
যেভাবে যাবেন
পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের অন্য কোনো এলাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে শিলিগুড়ি। বাস, ট্রেন বা প্লেন- সবপথেই যাওয়া যায় শিলিগুড়ি। সেই শহর থেকে ৫৫ নং জাতীয় সড়ক ধরে শুকনা মোড়ে গিয়ে বামদিকে মিরিকের রাস্তা ধরতে হবে। এরপর শিমুলবাড়ি পার করেই ডানদিকে বাঁক নিয়ে কার্শিয়াং শহরের রাস্তা ধরে কিছুটা গেলে পড়বে টোল গেট। গেট পরিয়ে মাত্র কয়েক কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে রোহিনী।
কোথায় খাবেন
রোহিনীতে খাওয়ার দোকান বলতে ছোট ছোট ফাস্টফুড দোকান রয়েছে। সেখানে প্রায় সব রকম মুখরোচক সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। তবে ইদানীং কয়েকটি রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। খাবারের আগে দরদাম জেনে নেওয়া ভালো।
- বান্দরবানের মুনলাই পাড়া: দেশের সুন্দরতম গ্রাম
- দর্শনীয় স্থান: উত্তরার দিয়াবাড়ি
- সাজেক ভ্যালি: মেঘের ভেলায় এক স্বর্গীয় রাজ্য
- নেপালে ভ্রমণের শীর্ষ ১০ স্থান
- ৫০ দিনে যেভাবে বদলে গেল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
- দর্শনীয় স্থান: মাধবপুর লেক
- দর্শনীয় স্থান: নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপ
- আমাজন জঙ্গল রহস্য ঘেরা এক মহাবিস্ময়
- দর্শনীয় স্থান: কেরানীগঞ্জের সাউথ টাউন
- নিলাদ্রি লেক: এ যেন বাংলাদেশের ‘কাশ্মীর’